মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো এবং সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মহাপরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরায় নাগরিক-যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন স্বদেশ, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলোজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর যৌথ উদ্যোগে শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১ টায় শহিদ আবদুর রাজ্জাক পার্কে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষাবিদ প্রফেসর আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে ও স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনার সমাবেশে বক্তৃতা রাখেন, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, জেলা জাসদের সভাপতি শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, নদী, খাল, পরিবেশ ও জলাশয় রক্ষা কমিটির সভাপতি মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ জাসদ সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, উন্নয়নকর্মী এডভোকেট মুনীরুদ্দীন, সিপিএফ’র পরিচালক সাংবাদিক ফারুক রহমান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাকিবুল রহমান বাবলা, যুব অধিকার কর্মী এস এম হাবিবুল হাসান প্রমুখ ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনোমিক্স, জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশের জন্য সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) প্রণয়ন করছে। এর আগেও ২০১০ ও ২০১৬ সালেও জাইকার সহোযোগিতায় বিদ্যুৎ খাত বিষয়ক মহাপরিকল্পনা (পিএসএমপি) প্রণয়ন করা হয়েছিল। এগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব হয়েছিল আমদানি-নির্ভর কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস। সকল পর্যায়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার পরিকল্পনা কমসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। আইইপিএমপি বিদ্যুৎ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ বন্ধ করে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি (পরিকল্পনা)’র এমসিপিপি আলোকে আগামী ১০০ বছরের বিদ্যুৎ পরিকল্পনা করার জোর দাবি জানান সমাবেশের বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, আইইপিএমপি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চরম ঘাটতি রয়েছে। জাইকা বা বাংলাদেশ সরকার কোন পক্ষই এই প্রকল্পের বাজেট ও কার্যক্রমে প্রবেশ করেনি। জাপানের কারিগরি সহায়তার অধীনে গোপনে জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে জাইকা এই কাজ করছে যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই জাইকার অর্থায়নে জাপানি প্রতিষ্ঠান আইইইজে প্রণীত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী খসড়া আইইএমপি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার’র আলোকে ২০৫০ সাল নাগাদ শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নের জন্য সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ প্রাধান্য দিয়ে দেশজ মালিকানায় দেশের নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা সব অংশিদারকে নিয়ে সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিই হবে আগামীর বিদ্যুৎ পরিকল্পনা’। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে জ্বালানি নীতি প্রণয়ন করতে হবে।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সিডোর নির্বাহী পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস, হেড সংস্থার নির্বাহী পরিচালক লুইস রানা গাইন, অর্জন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহুয়া মঞ্জুরী, সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ আফজাল হোসেন, ভূমিহীন নেতা আবদুস সাত্তার, কওছার আলী, যুব প্রতিনিধি মৃত্যুঞ্জয় রায়, মাহফুজা আক্তার মুক্তা, রোখসানা পারভীন পায়েল, সুমাইয়া ইসলাম লাম তিশা, তামান্না বুশরা, সুমাইয়া আক্তার ইতি, মুক্তা পারভিন পুতুল প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন অংশীদার জাপানের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তাদের কোম্পানি ও প্রযুক্তি চাপিয়ে না দিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। সরকারকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে সৌর বিদ্যুৎ ব্যস্থা তথা নবায়নযোগ্য জ¦ালানি কার্যক্রম বাস্তবায়নের দাবি জানান।
খুলনা গেজেট/এসজেড