সাতক্ষীরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্মান্তিরত করে বিয়ে করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ জিয়ারুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে শনিবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পর একই আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান শেষে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর গ্রামের মুদি ব্যবসায়ি জানান, তার মেয়ে বর্তমানে কার্টুনিয়া রাজবাড়ি ডিগ্রী কলেজের মানবিক বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ২০১৯ সালে তার মেয়ে নূরনগর আশালতা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করে। বর্তমানে তার বয়স ১৬ বছর চার মাস। নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করাকালিন প্রধান শিক্ষক শামীম আহম্মেদ বিভিন্ন ভাবে মেয়েকে উত্যক্ত করতো। বর্তমানে আফসার মাষ্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাওয়া আসার পথে তিনি মেয়েকে কুপ্রস্তাবও দিতেন। গত ২ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে প্রাইভেট পড়তে বেরিয়ে সে আর বাড়ি ফেরেনি। মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে শামীম আহম্মেদ ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে করেছে মর্মে জানতে পেরে ৭ এপ্রিল তিনি বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন।
নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ১২ এপ্রিল শামীম আহম্মেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার দুপুর একটার দিকে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন কৈয়ে বাজারের পার্শ্ববর্তী এক আত্মীয়ের ভাড়া বাড়ি থেকে প্রধান শিক্ষক শামীম আহম্মেদকে গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানান, শামীম আহম্মেদকে জেল হাজতে পাঠানোর পাশপাশি ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ জিয়ারুল ইসলাম। জবানবন্দিতে ৩ এপ্রিল মেয়েটিকে সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় নিয়ে এসে ধর্মান্তরিত করে একটি ভাড়া বাসায় তারা দু’জনে একসঙ্গে থাকতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি