সাতক্ষীরায় দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পেয়ে এক বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় বানিয়ে জেল হাজতে পাঠানো কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। শনিবার (২৪ এপ্রিল) তিনি নতুন কর্মস্থল পাটকেলঘাটা থানায় যোগদান করেছেন। তবে, কালিগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এ ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। কালিগঞ্জ থানা থেকে তাকে স্বাভাবিক বদলি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে দু’টি মোটর সাইকেলে উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেনসহ সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার ডেমরাইল গ্রামের মনোরঞ্জন মন্ডলের বাড়িতে এসে প্রথমে তক্ষক সাপ বিক্রি, পরে গাজা ও সর্বশেষ জুয়া খেলার মিথ্যা অভিযোগ এনে মনোরঞ্জন ও তার ছেলে সরোজিতের হাতে হাতকড়া পরান। এ সময় তাদের ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে মনোরঞ্জনের শ্যালক ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদার মোটর সাইকেলে তাদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাকেও মাদক দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন জিয়ারত হোসেন। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য প্রশান্ত’র সঙ্গে থাকা দেবেন মন্ডল ও সুভাষ মন্ডলকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তাদের হাতকড়া পরিয়ে মনোরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা মনোরঞ্জনের বড় ছেলে স্বপন মন্ডলের ভায়রা ভাই শ্যামনগরের কাঁচড়াহাটি গ্রামের কমলেশ মন্ডলকে ঘর থেকে বের করে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করে পুলিশ।
পরে মনোরঞ্জনকে ছেড়ে দেয়া হলেও বাকি চারজনকে ছেড়ে দিতে ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদারের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেন। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় ইউপি সদস্য’র মোটর সাইকেলসহ সরোজিত, কমলেশ, দেবেন ও সুভাষকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও কমলেশকে ভারতীয় নাগরিক বানিয়ে মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় পুলিশ। বৃহষ্পতিবার আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে, এ ঘটনায় তদন্তে নেমে গোয়ন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় জিয়ারত হোসেনকে শুক্রবার স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দোলোয়ার হুসেন জানান, বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় বানিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে, উপ-পরিদর্শক জিয়ারত হোসেনকে স্বাভাবিক বদলী করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
খুলনা গেজেট/কেএম