খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৬ জুলাই, ২০২৪

Breaking News

  জাতীয় দাবা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যু
  ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে চালক-হেলপার নিহত

সাতক্ষীরায় গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে বাবুল সরদার নামের এক মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১২ ডিসেম্বর) ভোর রাতের কোন এক সময়ে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি রাতের কোন এক সময়ে ডিবি অফিসের গারদের মধ্যে গ্রিলের সঙ্গে কোমরে থাকা সুতালী দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বাবুল সরদার।

মৃত বাবুল সরদার (৫৫) তিনি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মৃত জুড়ন সরদারের ছেলে।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ইয়াসিন আলম চৌধুরী জানান, ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম শনিবার বেলা ১২ টার দিকে এক অভিযান চালিয়ে দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর গ্রাম থেকে ৫০ বোতল ফেন্সিডিলসহ বাবুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে ডিবি কার্যালয়ে গারদখানায় রাখা হয়েছিল। রোববার সকালে তাকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুুতিকালে হাজতখানার গেট খুলে দেখা যায় আসামী বাবুল সরদার গলায় সুতালী লাগানো অবস্থায় গারদখানার গ্রিলের সাথে ঝুলছে। রাতের কোন এক সময়ে গারদের মধ্যে গ্রিলের সঙ্গে কোমরে থাকা সুতালী দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সকালে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ডাক্তার এসে তার সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করেন। মৃতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে তার পরবিারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে বাবুল সরদারের মেয়ে দেবহাটা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার ফলপ্রার্থী সুলতানা মুন্নী বলেন, শনিবার সকাল ১০ টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৪/৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে আসে। তাদের মধ্যে একজনের নাম মনিরুল ইসলাম। এসময় তারা একজন মহিলা সোর্সকে ঘরের মধ্যে পাঠায়। ওই মহিলা কয়েক বোতল ফেন্সিডিল ঘরের মধ্যে রেখে আসে। পরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা আমার পিতাকে নিয়ে ঘরের মধ্যে যায় এবং ওই মহিলার রেখে আসা ৪৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ পিতাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর তাদের ঘর তল্লাশী করার সময় ৩৫ হাজার টাকাও নিয়ে নেয় তারা। পরে তারা আমার বাবাকে হাতকড়া পরিয়ে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে এবং তার কাছ থেকে ভিডিও করে নেয় যে, তারা কোনো টাকা পয়সা নেয়নি মর্মে। তাকে সেখান থেকে সাতক্ষীরা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে এসে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এর পর তার মৃত্যু হলে রোববার সকালে আমার মাকে ডিবি অফিসে যেতে বলা হয়। খবর পেয়ে আমার মা শাহানারা বেগম ও ভাবী স্নেহ আরাকে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে আসেন। এসময় আমাদেরকে জানানো হয় আমার বাবার কোমরে থাকা সুতালী (ঘুনসি) দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু কিভাবে একজন সুতালী (ঘুনসি) আত্মহত্যা করে এটা সকলের কাছে প্রশ্ন। সেখানেও তাদের কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোঃ সজিব খান জানান প্রাথমিক তদন্তে সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চিকিৎসক ডিবি কার্যালয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারন বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে রাতে কতর্ব্যরত দুই পুলিশ সদস্যকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

দেবহাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্বা সংসদের সাবেক কমন্ডার আব্দুল ওহাব বলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবাবের সন্তান। তার মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবী করেন তিনি।

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!