সাতক্ষীরায় নিজের ফেইসবুক আইডি হ্যাক করে কে বা কারা অন্যদের নামে অশ্লীল মন্তব্য ও বাজে ছবি পোষ্ট করা ঘটনায় অপরিচিত কয়েক যুবক ও যুবতী বাড়িতে এসে গালিগালাজ ও হুমকি দেয়ায় ক্ষোভে ও অপমানে এক কলেজ ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার (৯ নভেম্বর) ভোর রাত তিনটার দিকে শহরের মুনজিতপুর এলাকায় এঘটনা ঘটে। আত্মহননকারি ওই কলেজ ছাত্রীর নাম নন্দিনী চৌধুরী (২১)। তিনি সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকার বিকাশ চৌধুরীর মেয়ে। নন্দিনী সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে বাংলা অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজ ছাত্রী নন্দিনী চৌধুরী খুব বিনয়ী স্বভাবের মেয়ে ছিল। এলাকার সবার কাছে সে ছিল খুবই প্রিয়। আগামী ১১ ডিসেম্বর যশোর জেলার মনিরামপুর এলাকার এক ধর্ণাঢ্য পরিবারের ছেলের সাথে তার বিয়ের দিনক্ষন ঠিক করা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তার ফেইস বুক আইডি হ্যাক হয়ে যায়। এঘটনায় তিনি অভিভাবকদের সহায়তায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছেন। রবিবার বিকাল ৫টার দিকে একটি ছেলে ও তিন জন মেয়ে নন্দিনীদের বাড়িতে এসে তার ফেইস বুক আইডি থেকে অশ্লীল মন্তব্য ও বাজে ছবি পোষ্ট করার অভিযোগ এনে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা মোবাইলে তার ভিডিও ধারণ করে তাকে হুমকি ধামকি দেয়ার পাশাপাশি তাকে শাসিয়ে যায়।
এঘটনায় দারুনভাবে ভেঙ্গে পড়ে নন্দিনী। বিষয়টি সন্ধ্যায় সদর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। জানানো হয় তার হবু শশুর বাড়ির লোকদেরকেও। রাতে পুলিশ এসে তাকে শান্তনা দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়। বিষয়টি সহজ ভাবে নেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে বোঝায়। রাতে খাওয়ার পর ১২টার দিকে যে যার ঘরে ঘুমাতে যায়। ভোর ৩টার দিকে নন্দিনী তার ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়ান পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। ভোরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ক্ষোভে ও অপমানে সে আত্মহত্যা করেছে। মৃতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে তার আত্মহননের জন্য দায়িদেরকে খুঁজে বের করতে পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন