আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় এক লাখ ১৪ হাজার ৯৯৮টি পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৮০ হাজার ৪৩৮টি। ফলে মোট চাহিদার বিপরীতে সাতক্ষীরায় বিক্রিযোগ্য গরুর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এবার অবৈধভাবে কোন গরু না আসায় স্থানীয় খামারিরা কিছুটা লাভবান হওয়ার আশা করলেও গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে আশানুরূপ লাভ করতে না পারার আশংকা করছেন তারা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, সাতক্ষীরায় এ বছর ৯ হাজার ৯২৬ জন খামারি কোরবানির জন্য জেলায় মোট এক লাখ ১৪ হাজার ৯৯৮টি পশু প্রস্তুত করেছেন। তবে জেলায় মোট পশুর চাহিদা রয়েছে ৮০ হাজার ৪৩৮টি। অর্থাৎ ৩৪ হাজার ৫৬০টি পশু অতিরিক্ত থেকে যেতে পারে। যা এই জেলা থেকে অন্য জেলায় পাঠানো যাবে। এছাড়া অন্যবারের তুলনায় এবার লাভ কম হবার আশংকা করছেন তারা। কারণ গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। যারা শহরাঞ্চলে গরু পালন করেন তারা পুরোটাই বাজার থেকে কেনা খাবারের ওপর নির্ভরশীল। যার ফলে একটি গরু পালন করতে যে খরচ হয় তা বাদ দিয়ে সামান্য লভ্যাংশ থাকছে তাদের।
সাতক্ষীরা সদরের তালতলা এলাকার গরু খামারি মোঃ আব্দুল কাদের জানান, একটি গরুর পেছনে যে অর্থ খরচ করা হচ্ছে, বিক্রি করে সেই তুলনায় লাভ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হলো গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি। ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু বর্তমানে ক্রেতারা ৬০-৬৫ হাজার টাকায় কিনতে চাচ্ছে। তবে কোরবানির বাজার এখনো শুরু না হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যাও একটু কম।
আব্দুল কাদেরের খামারে কোরবানির জন্য গরু ক্রয় করতে আসা ক্রেতা ইয়ারুল ইসলাম জানান, হাটের গরুর রোগবালাই হতে পারে তাই খামার থেকে গরু কিনতে এসেছেন তিনি। তবে খামারে গরুর দাম অনেক বেশি। যেমন গতবছর যে গরুর দাম ছিলো ৭০ হাজার সেই ধরনের গরু এ বছর দাম যাচ্ছে ৯০ হাজার টাকা। মূলত গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খামারিরা গরুর দাম বৃদ্ধি করছেন। তবে বর্তমানে ক্রেতা মিলছে অনেক কম।
সাতক্ষীরা সদরের অনেক খামারি জানান, ভারত থেকে গরু না আসায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভালো দাম পাওয়া যেতে পারে। গো খাদ্যের দাম হাতের নাগালে থাকলে দেশে আরও খামারি বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ জানান, জেলায় এবার চাহিদার তুলনায় কোরবানীর পশুর মজুদ রয়েছে অনেক বেশি। তবে দাম অন্যবারের তুলনায় একটু বেশি চাচ্ছেন খামারীরা। কারণ গোখাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় খামারীদের খরচ বেড়েছে। তবে গোখাদ্যের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অন্যান্য জেলার মতো সাতক্ষীরাতেও ‘নেপিয়ার ঘাস’ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারা। আগামীতে খামারিদের গরুর খাবার তৈরি ও ঘাষ চাষের প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে যাতে খামারিরা সহজে বাড়িতে গরুর খাবারের চাহিদা মেটাতে পারে ।ফলে গোখাদ্যের দাম কমলে খামারিরা লাভবান হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম