সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এবারও সাতক্ষীরার আম যাবে ইউরোপে। নিরাপদ, বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত আম ইউপোরসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৪ মে) সাতক্ষীরায় আম বাগান পরিদর্শন করেছেন রপ্তানিকারক প্রতিনিধি দল।
সাতক্ষীরার সুস্বাদু হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফল সবজি ও সহযোগী পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির প্রতিনিধিরা জেলার কলারোয়া, সদর, দেবহাটাসহ বিভিন্ন উপজেলার আম বাগান পরিদর্শন করেন। জেলার বিভিন্ন বাগান পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দলে ছিলেন, ইউরোপের প্রথম শ্রেণির রপ্তানিকারক আবুল হোসেন, নাজমুল হায়দার ভূঁইয়া, রাজিব দে, নাজির হোসেন, আজহারুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।
সাতক্ষীরার আমের সুনাম রয়েছে ইউরোপেও। প্রতি বছর এ জেলা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আম ইউরোপে রপ্তানি করা হয়। চলতি বছরও সাতক্ষীরার আম ইতালি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মানিতে রপ্তানি হবে বলে আশ্বাস দেন প্রতিনিধি দল।
এদিকে, অনুকূল আবহাওয়া ও ফলন ভালো হওয়ায় সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রির কথা জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি রয়েছেন।
সূত্রটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন, যা গত মৌসুমের তুলনায় ৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি। গত মৌসুমে জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির আম উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৫ হাজার মেট্রিক টন।
সূত্রমতে, জেলায় হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, তোতা, আম্রপলি ও ফজলিসহ অন্তত ১৫ জাতের আম উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। রপ্তানি করা হয় বিদেশে।
চাষী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে হিমসাগর, গোবিন্দভোগ ও ল্যাংড়া আম চাষ করেছেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে আম ধরেছে বেশি। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী আগামী ৫ মে গোবিন্দভোগ, ২৫ মে হিমসাগর ও ১ জুন ল্যাংড়া আম গাছ থেকে সংগ্রহ করা যাবে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন এলাকার আম বাগান পরিদর্শন করেছেন। আমরা আশাবাদি এবারও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হবে।
জেলার আম বাগান পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ ফল সবজি ও সহযোগী পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির সদস্য আবুল হোসেন জানান, সাতক্ষীরার আমের গুণগতমান অনেক ভাল। সে কারণে এ জেলার আম দেশের বাইরের বাজারে চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর আম রপ্তানি করে রেমিটেন্স বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এবছরও প্রায় ২০ মেট্রিক টন আম দেশের বাইরে রপ্তানির সম্ভবনা রয়েছে। তিনি আরও জানান, গত বছরে আম রপ্তানি করে নাজমুল হায়দার ভূঁইয়া ২য় এবং রাজিব দে ৩য় স্থান অর্জন করেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড