সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের জাকির হোসেনকে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা-২ আসনের সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবিসহ ১৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের ভাই সদর উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত কেরামত গাজীর ছেলে আবুল কাশেম গাজী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সাতক্ষীরা ১নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন বড়াল মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শহরের মুনজিতপুরের মৃত মীর এশরাক আলীর ছেলে মীর মোস্তাক আহম্মেদ (রবি), সাতক্ষীরার সাবেক ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তফিজুর রহমান, গোয়েন্দা শাখার ওসি মোঃ মহিদুল ইসলাম, এসআই হাসানুর রহমান, কনস্টেবল মোঃ আনোয়ার হোসেন, ব্রক্ষ্মরাজপুরের আব্দুর রশিদ গাজীর ছেলে মনিরুজ্জামান তুহিন, জাহানাবাজের মৃত শাহামত এর ছেলে আব্দুর রশিদ, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সাইফুল করিম সাবু, মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদের ছেলে মোক্তার হোসেন, জিয়ালা গ্রামের মৃত মান্দার সানার ছেলে আব্দুস সালাম সানা, দহাকুলার মৃত তায়জেলের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে কোপা মাসুদ, ভালুকা চাদপুরের মৃত শফি বাবু চৌধুরীর ছেলে ধুলিহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মিজান চৌধুরী, শাল্যে গ্রামের মৃত আব্দুল গফ্ফারের ছেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, ঘোনার সাবে চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুর রহমান মোশা ও ধুলিহর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবু সানা।
বাদী আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বাদী ও ভিকটিম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থক। গত ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বিকাল ৫টার সময় সাতক্ষীরা সদরের মাটিয়াডাঙ্গা বাজারের বিপ্লবের চায়ের দোকানে ভিকটিম জাকির হোসেন তার বন্ধুদের সাথে ক্যারাম বোর্ড খেলছিল। এ সময় সকল আসামীরা পারস্পারিক সহযোগিতা ও উপস্থিতিতে ভিকটিম জাকির হোসেনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেলযোগে বিপ্লবের দোকানে উপস্থিত হয়ে বাদীর ভাই জাকির হোসেনকে পিঠমোড়া দিয়ে দুই হাতে হ্যান্ড কাপ লাগায়। সেপাই আনোয়ারের গলায় থাকা মাফলার দিয়ে পা বেধে মোটা বেতের লাঠি দিয়ে নাকে মুখে, বুকে পিঠে সমস্ত শরীরে মারধর করে। তাদের কাছে থাকা আগ্নেয় অস্ত্রের বাট দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে।
একপর্যায়ে তাকে অপহরণপূর্বক মোটর সাইকেলে উঠিয়ে সাতক্ষীরা অভিমুখে নিয়ে যায়। বাদী এবং স্বাক্ষীরা থানাসহ ডিবি, সিআইডি অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় খোজ করে কোথাও তার সন্ধান পাইনি। একপর্যায় ৩ জানুয়ারী ভোর রাত ৩টার সময় দামারপোতা ওয়াপদা ভেড়ির নীচে বেতনা নদীর চরে জাকির হোসেনকে হাত, পা ও চোখ বাধা অবস্থায় দুই রাউন্ড গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবি কামরুজ্জামান ভুট্রো বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তৎকালীন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ালীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় বাদী এবিষয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। ওই সময়কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সম্ভব না হওয়ায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ায় মামলাটি দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম