সাতক্ষীরায় আমাদানী-রপ্তানী বাণিজ্যের তদারককারী সংগঠন ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। দুর্নীতিবাজদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নস্যাৎ করে অবশেষে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে ভোমরা স্থলবন্দরে। আগামী ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন কোন ষড়যন্ত্র বানচাল করতে না পারলে এটাই হবে সংগঠনটির প্রথম প্রত্যক্ষ নির্বাচন।
নির্বাচনে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে ৯টি পদের বিপরীতে মোট ৩৫জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের মধ্যে সাতক্ষীরার ২৫জন, বেনাপোলের ৯জন এবং জামালপুরের একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। এরপরই চুড়ান্ত হবে কারা কাদের নিয়ে প্যানেল দিচ্ছে। তবে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি একে ফজলুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন ও মাকসুদ খানের নেতৃত্বাধীন প্যানেলকে সমর্থন প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উল্লেখযোগ্য যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন, শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, মাকসুদ খান, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, আবুল হাসান, আবু মুছা, রফিকুল ইসলাম হাজী, অহিদুল ইসলাম, কাজী নওশাদ রাজু, মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম, নাসিম ফারুক খান মিঠু, হাবিবুর রহমান হবি, আব্দুল মোমেন খান সান্টু প্রমুখ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরাফাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় ১২০জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৫জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আজ মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ভোমরা স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা হয়। ধীরে ধীরে বন্দরটি আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও নানা কারণে আজও এটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে চালু হয়নি। বন্দর সংশ্লিষ্ট বহু সংগঠন জন্ম নিলেও সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনকে বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রথমবারের মতো সংগঠনটির নির্বাচনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। গত তিনটি নির্বাচন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও কতিপয় রাজনীতিকের হন্তক্ষেপে ব্যবসায়ীদের মতামত ছাড়াই কমিটি গঠন করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। এরই ধারাবাহিকাতায় গত ৪ সেপ্টেম্বর একই প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করা হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দাখিল হয়।
এদিকে এসোসিয়েশনের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিভাগীয় শ্রম পরিচালকের দপ্তর অগঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠন করা ওই কমিটি অনুমোদন করেনি। একপর্যায়ে ৫ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী শেখ এজাজ আহমেদ স্বপনের নেতৃত্বাধীন আহবায়ক কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যদিও টাকায় কমিটি বেচা-কেনা করার চক্রটির ষড়যন্ত্র অব্যহত রেখেছে। তারপরও যেকোন অশুভ শক্তিকে পরাভূত করে আগামী ১১ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানে আহবায়ক কমিটি বদ্ধপরিকর বলে জানান আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন।