সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত প্রতারক বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রতারণার মামলায় যথাক্রমে ৭ দিন ও ১০ দিনের পৃথক রিমান্ড শুনানির জন্য আগামীকাল রবিবার (৯ মে) দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, পহেলা মে শনিবার ভোরে সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত কথিত ডাক্তার শহরের পলাশপোল এলাকায় বসবাসকারি নড়াইলের বাসিন্দা বাদশা মিয়াকে বাইপাস সড়ক সংলগ্ন শফিকুল ইসলামের ফাস্ট ফুডের দোকানের পাশ থেকে একটি পিস্তল ও দু’ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলী তরফদার বাদি হয়ে ওই দিনেই সদর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা (জিআর-২৯৯/২১ সদর) দায়ের করেন।
এর আগে ৩০ এপ্রিল শুক্রবার শহরের কামালনগরের শহীদুলের দোকান থেকে বাদশা এর ব্যবহৃত দু’টি নকল সীল, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব লেখা একটি নকল নোট প্যাড, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য এর নকল ডিও লেটার/প্যাড ওসি দেলোয়ার হুসেনের নামে লিখিত মিথ্যা অভিযোগসহ বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র এবং জমাজমি সংক্রান্ত কাগজ-পত্র, ওসি দেলোয়ার হুসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত কপি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোস্তফা আলম বাদি হয়ে বাদশা মিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে আরো একটি মামলা (জিআর-৩০০/২১ সদর) দায়ের করেন।
ইয়াছিন আলম চৌধুরী আরো জানান, অস্ত্র মামলার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান ফারাজি প্রতারক বাদশা মিয়াকে জিজ্ঞাবাদের জন্য রবিবার আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। সোমবার শুনানী শেষে মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার তাকে জেলখানা থেকে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। রিমান্ড শুনানী শেষে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এ ছাড়া পরিচয় গোপন রেখে অবৈধ আর্থিক লাভের উদ্দেশ্য প্রতারণাসহ মানহানিকর তথ্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে প্রচারের অভিযোগে ২ মে বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান ফারাজি বাদি হয়ে সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা (জিআর-৩০৬/২১ সদর) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোঃ জিয়াউর রহমান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইদিন আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীর শুনানীর জন্য আগামি রবিবার দিন ধার্য করেন।
এদিকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বাবুল আক্তার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। যার শুনানির জন্য আগামিকাল রবিবার দিন ধার্য আছে।
প্রসঙ্গত, গত পহেলা মে শনিবার বিকাল তিনটায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত বাদশা মিয়ার প্রতারণার বিভিন্ন কাহিনী তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতারণাসহ হাফ ডজন মামলার আসামী বাদশা’র বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলী বাদি হয়ে শনিবার অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় বাদশা মিয়ার সহযোগী শহরের ইটাগাছার সাগর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো মামলার প্রস্তুতি চলছে।
খুলনা গেজেট/এনএম