সাতক্ষীরায় নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নৌকায় বসবাসকারি এক গৃহবধূ সন্তান জন্ম দিলেন নৌকায়। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বন্যতলা ভাঙন কবলিত এলাকায় বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে নৌকার উপর সাত সদস্যের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন সাতক্ষীরার উপকুলীয় প্রতাপনগর এলাকার ইয়াকুব আলী। খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। ভাঙ্গনের কবলে ঘরবাড়িও বিলীন হয়ে গেছে পরিবারটির। নিরুপায় হয়ে বসবাস করছেন মাছ ধরা নৌকার উপর। সেখানেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন ইয়াকুব আলীর স্ত্রী মিনারা খাতুন। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বন্যতলা ভাঙন কবলিত এলাকায় নৌক একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন প্রসুতি মিনারা খাতুন।
নবজাতকের পিতা মৎস্যজীবী ইয়াকুব আলী জানান, আমি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। বন্যতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। ১৫ দিন আগে ঘরবাড়িও চলে যায় খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে। তারপর সাত সদস্যের পরিবার নিয়ে মাছ ধরা নৌকাটির উপর বসবাস করছি। স্ত্রী মিনারা খাতুন গর্ভবতী ছিল। যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় কোন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি তাকে। বুধবার রাতে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়েছে। মা-ছেলে দুইজনই এখন সুস্থ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নদীর ভেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে বাস্তচ্যুত হয়ে গেছি আমরা। যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আমাদের যাওয়ার মত জায়গা নেই। কি করবো ? উপায় না পেয়ে নিজের উপার্জনের একামত্র অবলম্বন নৌকাতেই বসবাস করছি।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বলেন, নৌকার উপর সন্তানের জন্ম হচ্ছে তবে উপলব্ধি করুন এলাকার মানুষ কতটা কষ্টে রয়েছে। বন্যতলা বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। বন্যতলার ওই এলাকাটি প্রতাপনগর ইউনিয়ন ও শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা। বাঁধ মেরামত না হওয়ায় লোকালয় এখনো নিয়মিত জোয়ারভাটা চলছে। বসতভিটা হারিয়েছে হাজারো মানুষ। বাধ্য হয়েই কেউ বেড়িবাঁধের উপর কেউবা নৌকায় বসবাস করছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই