সম্প্রতি দেশ জুড়ে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে অতি বর্ষণের সাথে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্যামনগর উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্মিত বিকল্প রিং বাঁধ ভেঙ্গে ফের সমগ্র ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এসময়ে মাছের ঘের তলিয়ে চিংড়ীসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ নদীতে ভেসে যায়। এতে ইউনিয়নের মৎস্য চাষীরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার জানান, টানা বর্ষণে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গাবুরায় যাবতীয় মৎস্য ঘের তলিয়ে যায়। ইউনিয়নব্যাপী চাষীরা ৭১০ হেক্টর জমিতে চিংড়ীসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ করে। নদ-নদীর পানিতে গাবুরা ইউনিয়নের ৭ শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে যায়। এতে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ১৮০ মেট্রিক টন সাদা মাছ, ৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার ১৩৫ মেট্রিক টন চিংড়ী মাছ, ৩৮ লক্ষ টাকার ৯০ লক্ষ চিংড়ী মাছের পোনা সহ ০.৯০ লক্ষ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
গাবুরার চকবারা গ্রামে মাছ ব্যবসায়ী ফিরোজ ও সাইদুলসহ অনেকে জানান, বিভিন্ন সংস্থা ও মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ধার দেনা করে চিংড়ী চাষ করে এখন চোখে সরষের ফুল দেখছেন তারা। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ঘের তলিয়ে যাবতীয় মাছ নদীতে ভেসে যাওয়ায় তারা একেবারে সর্বশান্ত হয়ে গেছে। এ ধরনের অভিযোগ অন্য চাষীদেরও। সরকারের সহায়তা না পেলে ঋণের চাপে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না গাবুরার মাছ চাষীদের।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম জানান, মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে একেবারে পঙ্গু হয়ে গেছেন। ঘেরের মাছ নদীতে ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষীদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পাঠানো হয়েছে। এই মূহুর্তে মাছ চাষীদের বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমআর