আগামী ২৮ নভেম্বর রোববার সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ১২ ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্খিত নির্বাচন। ভোটারদের কাছে টানতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণা। গণসংযোগ, পথসভা, পদযাত্রাসহ নানামূখী প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতা কর্মীদের গোপন বৈঠকে প্রতিপক্ষকে অবৈধভাবে ঘায়েল করার নানা কুটকৌশল নিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু ফাঁস হওয়ায় জনমনে নতুন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার ২নং বিষ্ণুপুর ইউপি’র স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের ভাই আলমগীর হোসেনকে মুকুন্দমধুসুধনপুর এলকায় বুধবার রাতে প্রচারনার সময় পুলিশের সামনে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করা হলেও পুলিশ ছিল নিরব দর্শকের ভূমিকায়। বিষয়টি নিয়ে বিষ্ণুপুরসহ গোটা উপজেলায় চলছে নানামূখী আলোচনা ও সমালোচনা। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার হামলা, পোস্টার ছেড়া, ব্যানার খুলে নেয়া, কর্মী সমর্থকদের হুমকি ও মারপিটের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার, থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কাঙ্খিত প্রতিকার মেলেনি। এজন্য সাধারণ মানুষ সত্যিই নিরাপদে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারবেন কী না সে বিষয়ে নতুন করে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শেখ রিয়াজ উদ্দীন জনগণের রায়ের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। গত ৫ বছরে তার অপশাসনে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে ভোটবিপ্লব ঘটাবে এটা বুঝতে পেরেছেন। এজন্য নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে তার পোষা গুন্ডাবাহিনীকে মাঠে নামিয়েছেন। জনগণের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে তারা ভোটকেন্দ্রে না যায়। বুধবার গভীর রাতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গোপন মিটিং করে বিভিন্ন ছক তৈরী করেছেন। ভোটের দিন সকালে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালট পৌছানো হবে। এজন্য নিজেদের চেনাজানা সমর্থকদের ছাড়া অন্যদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হবে। যদি কেউ বাধা উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে পৌছায় তাদেরকে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সীল মারতে বাধ্য করা হবে। সুযোগ বুঝে প্রতিপক্ষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালটে সীল মেরে বাক্সে ভরা হবে। এসব পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নারী ভোটাররা এবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন কী না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন। বিগত ইউপি নির্বাচনেও রাতে ব্যালটে সীল মেরে ও দিনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তার নিশ্চিত বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। এবারও শেখ রিয়াজ উদ্দীন একই পথে হাটছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে শেখ রিয়াজ উদ্দীন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এখনও পর্যন্ত তারা নিজ পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন বলে আশা করছেন। তবে সময় যত গড়াচ্ছে নানা ধরণের শঙ্কাও সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসন কঠোর ভূমিকায় থাকলে সব শঙ্কা মিথ্যে প্রমাণিত হবে এবং ২৮ নভেম্বর একটি ভোট উৎসব হবে এমন আশায় রয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, পুলিশের সামনে জাহাঙ্গীর আলমের ভাইকে মারধর করা হয়েছে এমন ঘটনা আমার জানা নেই। জনগণ যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সে ব্যাপারে প্রশাসন সঠিক অবস্থানে রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএ