সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকায় চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শেখ হাসিবুল হাসান ইমন হত্যার ৫ বছর পূর্ণ হল আজ (১৬ জানুয়ারি)। দীর্ঘ পাঁচ বছরেও আলোচিত এই হত্যাকান্ডের আসল রহস্য উদঘাটন ও মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে ইমনকে হত্যা করে লাশ সদর মাটিয়াডাঙ্গার এক মৎস্যঘেরের পাশে ফেলে আসা হয়েছিল। ১৭ জানুয়ারি সকালে লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধার করার সময়ে শেখ বখতিয়ার রহমান বিপ্লবকে সকাল সাড়ে ১০টায় এবং বেলা ১১টায় শেখ মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার বাদী শেখ আলমগীর হাসান আলম সন্ধ্যায় রেজাউল মোল্যা রনিকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করান। এরপর রাত ১০টার পর সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে কাজী সাইফুল ইসলামকে সদর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর পরপরই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে মামলার বাদী শেখ আলমগীর হাসান আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিবুল হাসান ইমন তার চাচার কাছে রাতে টাকা আনতে গিয়ে উধাও হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাতে ইমনের মাথার পিছনে শক্ত কোনো কিছু দিয়ে আঘাতের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। রাত গভীর হলে ভ্যানে তুলে মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের একটি মৎস্যঘেরের পাশে ফেলে আসা হয়েছিল। এসময় মাটিয়াডাঙ্গার বাজারের নৈশ প্রহরী ভ্যানে বস্তার ভিতরে কিছু নিয়ে যাওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছিল। একই সময়ে মোটরসাইকেলে দু’জনকে যেতে দেখেছিল। কিছু সময় পর খালি ভ্যান ও মোটরসাইকেলের দু’জনেই সাতক্ষীরার দিকে ফিরে যেতে দেখার কথা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ওই সময় মোটরসাইকেল ও ভ্যান উদ্ধার করার তৎপরতা শুরু করলে তড়িঘড়ি করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে ছাত্রলীগ নেতা শেখ হাসিবুল হাসান ইমন হত্যা মামলার আর কোনো অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যায়নি।
ইমন হত্যাকান্ডের পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হলেও হত্যা মামলার তেমন কোন অগ্রগতি না হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইমনের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বিভাগে নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ইমন হত্যার সাথে জড়িত যেই হোক তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসি দেখতে চায় ইমনের বাবা-মা ও এলাকাবাসী।
খুলনা গেজেট/ এস আই