সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পৃথক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত দেড়টার দিকে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামের একটি ধান ক্ষেতে বিদ্যুৎ লাইনের তারে জড়িয়ে ও সকাল ১০টার দিকে কুল্যা ইউনিয়নের কাদাকাটি গ্রামে বাড়িতে সিলিং ফ্যান লাগানোর সময় পৃথক এঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোদাড়া গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে আব্দুর রশিদ গাজী (২৫) ও একই গ্রামের গোলাম রসুল সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী সরদার (২৬) এবং কুল্যা ইউনিয়নের কাদাকাটি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৬।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামের জনৈক কবির কাউকে না জানিয়ে ইদুর মারার জন্য বিলের ধান ক্ষেতের আইলের উপর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন দিয়ে রাখে। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার ভোর রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গোদাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ গাজী ও ইদ্রিস আলী সরদার মাছ মারার জন্য ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় কবিরের ধান ক্ষেতের আইলে পা রাখার সাথে সাথে তারা দু’জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এদিকে শুক্রবার সকালে ওই দুই যুবক বাড়িতে না ফেরায় বাড়ির লোকজন তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সকাল সাতটার দিকে জমির মালিক কবির তার ধান ক্ষেতে সার দিতে যেয়ে দেখে দুই যুবকের মৃত দেহ পড়ে আছে। এ সময় সে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ওই দুই যুবকের পরিচয় সনাক্ত করে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেনের মাধ্যমে থানায় খবর দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে। এসময় ধানক্ষেতের মালিক কবির নিজের অপরাধ স্বীকার করে আশাশুনি থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে। বর্তমান সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে নিহত দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। জমির মালিক থানা হাজতে আটক আছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অপরদিকে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের কাদাকাটি গ্রামে বাড়িতে সিলিং ফ্যান লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে যুবক মেহেদী হাসান।
নিহত যুবকের পিতা হাবিবুর রহমান জানান, তার ঘরের সিলিং ফ্যানটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নিজে ঠিক করার চেষ্টা করছিল মেহেদি হাসান। এ সময় ফ্যানের লাইনের খোল তারে অসাবধানতাবশতঃ হাত লাগায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মেহেদি হাসান। আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।