সাতক্ষীরায় ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী দুই ভারতীয় নাগরিক নিহত ও একজন আহত হয়েছে। শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকাল পৌনে সাতটার দিকে শহরের অদূরে তালতলাস্থ বিজিবি হেডকোয়ার্টারের সামনে এই ঘটনা ঘটে ।
নিহতরা হলেন ভারতীয় নাগরিক ওয়াসিম কুমার বিশ্বাস (৫৫) ও তার স্ত্রী ছবি বিশ্বাস (৪৮)। ওয়াসিম কুমার বিশ্বাস খুলনা-মোংলা রোড রেল লাইন প্রকল্পের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সিভিল/ট্রাক) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ভারতীয় রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইরকোন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের একজন ষ্টাফ তিনি। তাদের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি জেলার করিমপুর এলাকায়। ছুটিতে সস্ত্রীক তিনি দেশে যাচ্ছিলেন। আহত প্রাইভেটকার চালক খুলনার খানজাহান আলী থানা এলাকার সজীব (৩৫)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় নাগরিক ওয়াসিম কুমার বিশ্বাস ছুটিতে সস্ত্রীক সড়ক পথে ভারতে যাওয়ার জন্য শনিবার সকালে খুলনা থেকে একটি প্রাইভেটকার ( ঢাকা মেট্রো-খ, ১৩-৩৫১৪) ভাড়া নিয়ে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সকাল পৌনে সাতটার দিকে শহরের অদূরে সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের তালতলাস্থ ৩৩ বিজিবি হেডকোয়ার্টারের সামনে পৌঁছালে সাতক্ষীরা থেকে খুলনাগামী তেলের খালি ড্রাম ভর্তি একটা ট্রাকের (খুলনা মেট্রো-ট, ২০-৮৭৭০) সঙ্গে প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে প্রাইভেটকারের যাত্রী দুই ভারতীয় নাগরিক ওয়াসিম কুমার বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ছবি বিশ্বাস ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় তাদের বহনকারি প্রাইভেটকারটির সামনের অংশ ট্রাকের তলায় চলে যায়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় প্রাইভেটকারের চালক সজীব।
খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়। এসময় গাড়ির সামনের দরজা ভেঙ্গে চালক সজীবকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সাতক্ষীরা পুলিশের বিশেষ শাখার উপ পরিদর্শক গংগা রানী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভারতীয় নাগরিক ওয়াসিম কুমার বিশ্বাস খুলনা-মোংলা এলাকায় চলমান রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে সড়ক পথে দেশে যাওয়ার জন্য তিনি খুলনা থেকে ভোমরা ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি জেলার করিমপুর এলাকায়।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে। ময়না তদন্ত শেষে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে এর চালক পালিয়ে গেছে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম