সাতক্ষীরার অ্যাড. আব্দুর রহমান কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মকছুদুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র এর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৩ জুলাই) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সদরের লাবসা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু সুফিয়ান সজল ও জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ বাবু।
লিখিত বক্তব্যে আবু সুফিয়ান সজল বলেন, সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের বিনেরপোতা আব্দুর রহমান কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন মো. মকছুদুর রহমান ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা ৪ বারসহ মোট ৫ বার অবৈধভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সভাপতির দায়িত্বে থেকে তিনি জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধিান পরিপন্থী ও বিষয় বহির্ভূত শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক রমেশ চন্দ্রকে দীর্ঘ ৪ বছরের অধিকসময় ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সভাপতি মকছুদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র ও শিক্ষক প্রতিনিধি সুশান্ত মন্ডলের যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিধি-বিধান উপেক্ষা করে আর্থিক অনিয়ম, জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্য, ব্যাংক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মকছুদুর রহমান শর্তপূরণ না করে কলেজটি ব্যাক্তি নামে নামকরণের জন্য ১৫ লাখ টাকা ও প্রতিষ্ঠাকালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৩৪ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে ২৩ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া বর্তমান সভাপতি মকছুদুর রহমান ৫ বার বিধি বর্হিভুতভাবে সভাপতি হয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান ও সংবিধি উপেক্ষা করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকার অনিয়ম করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র পরিচালনা পলিষদের সদস্যদের যোগসাজশে অতি সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি ব্যাতিত অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে দুই জন ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারীর নিয়োগে ৩০ লাখ টাকা আর্থিক দুর্নীতি করেছেন।
তিনি আরো বলেন, সভাপতি মকছুদুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র ২০২৩ সালে জাল জালিয়াতের মাধ্যমে ব্যাকডেটে (২০০৫-২০০৬ খ্রিঃ ঘঞজঈ চালুর পূর্ববর্তী সময় দেখিয়ে) ২২ জনের অধিক প্রভাষক ও কর্মচারী অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে কমপক্ষে দুই কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তারা এপর্যন্ত বিভিন্ন খাত থেকে মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা তছরুপসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এ সময় কলেজটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মকছুদুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরদার রমেশ চন্দ্র ও শিক্ষক প্রতিনিধি সুশান্ত মন্ডলের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিসহ তাদের অপসারণের জন্য স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এএজে