বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও আঘাত আসলে সকলেই এক হয়ে তার প্রতিবাদ করে। মর্যাদা রক্ষায় ও নিরাপত্তার স্বার্থে সকল সাংবাদিক ঐক্যবদ্ধ। লড়াই সংগ্রামেই সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতা প্রমাণিত হয়। ২ মাস অতিবাহিত হলেও সাংবাদিক রুবেল হত্যার আসামী গ্রেপ্তার না হওয়া ও তদন্তে এ হত্যার ক্লু উদঘাটন না করতে পারা প্রশাসনেরই ব্যর্থতা। অবিলম্বে সাংবাদিক রুবেল হত্যার বিচার করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক রুবেল হত্যার বিচার দাবিতে দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে সাংবাদিক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়া জেইউকে এ সাংবাদিক মহাসমাবেশ আয়োজন করে।
সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশিদুল ইসলাম বিপ্লব। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, সহ সভাপতি আফরোজা আক্তার ডিউ, যুগ্ম মহাসচিব মো: হেদায়েৎ হোসেন মোল্লা। বিশেষ বক্তা ছিলেন যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন-জেইউজের সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন।
বক্তৃতা করেন বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য সোহেল রানা, শাহাবুদ্দিন আলম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করে সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়া জেইউকে এর সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান।
সমাবেশে নিহত রুবেলের চাচা মিজানুর রহমান, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি ও আজকের প্রত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক মিলন উল্লাহসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন। নিহত রুবেলের শোকাহত পরিবারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে অবিলম্বে সাংবাদিক রুবেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের দাবি করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, যে সময় সাংবাদিকরা দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে লেখা লেখি করার দরকার সেই সময় তারা রাজপথে সহকর্মীর হত্যার বিচরের দাবীতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এবং একটি চক্র এই হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সরকারের মুখোমুখি কার পায়তারা চালাচ্ছে। তাই অবিলম্বে রুবেল হত্যার সাথে জড়িতদের গেপ্তারের জোড় দাবী জানান তারা। কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের ব্যার্থতা তুলে ধরে এসময় সাংবাদিক নেতারা বলেন রুবেল হত্যার দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এই হত্যা কান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত এমন কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আসলে পুলিশ হত্যাকারীদের ধরতে পারছে না নাকি ধরতে চাইছে না এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সহায়তায় সব কিছু সম্ভব। কিন্তু পুলিশ এই হত্যা কান্ড নিয়ে কেন ব্যার্থ হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, অবিলম্বে এই হত্যাকান্ডে রহস্য উম্মোচিত না করলে আগামী দিনে আরো বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসুচি দেয়া হবে।
এসময় সাংবাদিক রুবেলের মা সহ পরিবারের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন ছয় উপজেলার প্রেসক্লাব, রিপোটার্স ইউনিটিসহ জেলার সর্বস্তারের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার শত শত সাংবাদিক সমাবেশে অংশগ্রহন করেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল গত ৪ জুলাই সন্ধার পর একটি ফোন আসার পর নিজ অফিসের নিচে আসেন এবং সেখান থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ৩ দিনের মাথায় ৭ জুলাই কুষ্টিয়ার কুমারখালীর যদুবয়রা ব্রিজের নিচে গড়াই নদী থেকে অর্ধ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তার লাশ এবং রুবেলের পরিবার বাদী হয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় অজ্ঞাত আসামি দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার কোনো অগ্রগতি না থাকায় বিভিন্ন সময় কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন মানববন্ধনসহ নিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি। সেই সকল কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলার তেমন কোন অগ্রগতি না থাকায় ডাক দেওয়া হয় এই সাংবাদিক মহাসমাবেশের এমনটাই দাবি স্থানীয় সাংবাদিক নেতাদের।
খুলনা গেজেট/ টি আই