খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেছেন, “আমার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হবেন না। আশা করি গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবো।”
প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার (৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নবনিযুক্ত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনসমূহ, গবেষণায় সাফল্যের কথা, প্রাথমিক পরিকল্পনা, অতিসম্প্রতিক গৃহীত পদক্ষেপ এবং চ্যালেঞ্জসমূহ উপস্থাপন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস এবং ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো: শরীফ হাসান লিমন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছি। করোনা ভাইরাস শনাক্তে আরটি পিসিআর ল্যাব চালুর ব্যাপারেও কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বদ্ধভূমি সংরক্ষণের মহাপরিকল্পনাও আমরা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের জায়গা রয়েছে। তাহলো দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির পাশাপাশি গবেষণা। এই গবেষণাই একটি দেশ, জাতি, সমাজ ও এলাকার কাঙ্খিত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত বিশ্বের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধির মূলে কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও দিকনির্দেশনা। করোনা মহামারির টিকা বিশ্বের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন হয়েছে। এরূপ সংকটের সমাধান ও সম্ভাবনার বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমরা স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি। এর মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টিতে বর্তমান ক্যাম্পাসে ৩৩৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করা, নবীন শিক্ষক গবেষকদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার সাথে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা, উপকূলীয় অঞ্চলের উপর গবেষণা করা এবং বিশেষ করে খুলনা উপকূলীয় এলাকায় নানামুখী সমস্যার উপর গবেষণা জোরদার, সুন্দরবন সম্পর্কিত বহুমুখী গবেষণা জোরদার এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দরবন গবেষণার অান্তর্জাতিক অধিক্ষেত্র তৈরি করা, উন্নত গবেষণায় শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে গবেষণা বরাদ্দ ও বৃত্তির আওতা বৃদ্ধি।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে এবং শৃঙ্খলা ধরে রাখতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি- আমার মেয়াদে কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিহিংসার শিকার হবেন না এবং কোন অনিয়ম-দুর্নীতি আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। আমি সবার সহযোগিতা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে চাই।
খুলনা গেজেট/এনএম