মার্কো ইয়ানসেন আর উইয়ান মুল্ডাররা কাজ সেরে রেখেছিলেন আগেই। ইংল্যান্ড অলআউট ১৭৯ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড ম্যাচের বড় আকর্ষণ ছিল সেমিফাইনাল নিশ্চিতকরণ। বেশ বড় ব্যবধানে হারলে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিটকে যেত টুর্নামেন্ট থেকে। আফগানিস্তানের জায়গা হতো পাকা। কিন্তু প্রোটিয়ারা ইংল্যান্ডকে ১৭৯ রানে আটকে ফেলার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের সেমিফাইনাল।
যেকোনো ব্যবধানে হারলেও তাই দক্ষিণ আফ্রিকাই চলে যেত সেমিতে। কিন্তু প্রোটিয়ারা হারেনি। বরং অনেকটা হেসেখেলেই তুলে নিয়েছে ৭ উইকেটের জয়। হেনরিখ ক্লাসেন এবং রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের জোড়া ফিফটি সহজ করেছে প্রোটিয়াদের জয়। আর এই ম্যাচের মাধ্যমে বি-গ্রুপ থেকে সেরা হয়েই সেমিতে পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ পয়েট অস্ট্রেলিয়ার। আর ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থেকে শেষ করেছে আফগানিস্তান। কোনো ম্যাচে জয় না পাওয়া ইংল্যান্ড টুর্নামেন্টেরই সবার শেষ অবস্থান নিশ্চিত করেছে।
১৭৯ রানের টার্গেট, সেমিফাইনালও নিশ্চিত। এমন এক ম্যাচে শুরুতেই ধাক্কা খেল দক্ষিণ আফ্রিকা। জফরা আর্চার আরও একবার পাওয়ারপ্লেতেই পেলেন উইকেটের দেখা। ৫ বল খেলে ডাক মেরে ফেরেন ট্রিস্টান স্টাবস। তিনে আসা ভ্যান ডার ডুসেনকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে তোলেন রায়ান রিকেলটন। তবে দলীয় ৪৭ রানে ফেরেন রিকেলটন নিজেও। এবারেও উইকেটশিকারী জফরা আর্চার।
কিন্তু এরপরেই হেনরিখ ক্লাসেন আর ভ্যান ডার ডুসেন ইংল্যান্ডকে একেবারেই ছিটকে দিয়েছেন ম্যাচ থেকে। ক্লাসেন পেয়েছেন টানা ৫ম ফিফটি। পঞ্চাশের মাইলফলক স্পর্শ করেন ডুসেন নিজেও। দুজনের জুটি ১২২ বলে ১২৭ রানের। দক্ষিণ আফ্রিকা যখন জয় থেকে ৬ রান দূরে, তখনই আউট হন ক্লাসেন। ডেভিড মিলার ২ বলেই নিশ্চিত করেন দলের জয়।
এর আগে করাচিতে মার্কো ইয়ানসেনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে রীতিমত দিশেহারা ছিল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। ইয়ানসেন নিজে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সঙ্গে নিয়েছেন দুই দারুণ ক্যাচ। উইয়ান মুল্ডারের ঝুলিতেও গিয়েছে ৩ উইকেট। ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা করতে পেরেছিল মোটে ১৭৯ রান। সর্বোচ্চ ৩৭ রান জো রুটের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে বোলার জোফরা আর্চারের ব্যাট থেকে।
প্রথম ওভারেই খাটো লেন্থের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিল সল্ট। তৃতীয় ওভারে প্রায় একই রকমের বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জেমি স্মিথ। সপ্তম ওভারে কট এন্ড বোল্ড হন বেন ডাকেট। শুরুর ৩ উইকেটই মার্কো ইয়ানসেনের ঝুলিতে।
জো রুট এবং হ্যারি ব্রুক শুরু করেছিলেন ধীরগতিতে। খানিকটা থিতু হয়েই আগ্রাসী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল দুজনের। কিন্তু ৬২ রানের জুটি শেষে দুজনেই যখন খানিক আগ্রাসী হওয়ার চিন্তায়, তখনই কেশব মহারাজের আঘাত। ব্রুক উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইনে দারুণ ক্যাচ নিয়েছিলেন ইয়ানসেন।
পরের ওভারেই মুল্ডারের বলে বোল্ড জো রুট। লিয়াম লিভিংস্টোন, জেমি ওভারটনরা পারেননি দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে। সেই কাজটা করেছেন আর্চার। ৪ চারের মাধ্যমে করেছেন ২৫ রান। ততক্ষণে অবশ্য প্রোটিয়া বোলারদের কল্যাণে রীতিমত বিধ্বস্ত ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। জস বাটলার ৪৩ বলে ২১ রান পর্যন্ত গিয়েছেন। কিন্তু সেখান থেকে দলকে আর বিপর্যয়ের মুখ থেকে ফেরাতে পারেননি।
ইংল্যান্ডের ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত গিয়েছে ১৭৯ পর্যন্ত। আর দুর্দান্ত বোলিং করেই নিজেদের সেমিফাইনাল পুরোপুরি নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ক্লাসেন-রাসি ভ্যান ডার ডুসেন নিশ্চিত করেছেন গ্রুপসেরার জায়গাটা।
খুলনা গেজেট/এএজে