হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন বৈঠকের শূরার সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটায় মজলিসে শুরার পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
রাতে দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হটহাজারী মাদ্রাসার আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কক্ষে মজলিসে শুরার বৈঠকে তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। মজলিসে শুরা অব্যাহতি গ্রহণ করে আল্লামা শফীকে সদরুল মুহতামিম হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছে। আল্লামা আহমদ শফী শারীরিক গুরুতর অসুস্থ বিধায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এতে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ আপত্তি জানায়।
মজলিসের শুরার সদস্যরা আরও জানান, মাওলানা আনাস মাদানীকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং গতকালের সব সিদ্ধান্ত বলবত রেখেছে শুরা। এবং মাওলানা নুরুল ইসলামকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফী, আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মাওলানা শেখ আহমদ, মাওলানা নোমান ফয়েজি, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মুফতী নুর আহমদ, মাওলানা শোওয়াইব, মাওলানা ওমর, মওলানা কবির আহমদ, মাওলানা আহমদ দিদার, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী। এর আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্ধ্যায় হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কিন্তু ওই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে ছাত্ররা আন্দোলন চালিয়ে যায়। মাদ্রাসা ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মাদরাসার সবগুলো ফটকে তালা দেওয়া, বন্ধ রয়েছে ক্লাস। বাইরে মোতায়েন রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে বেশকিছু দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা। তারা মাদ্রাসার সব কটি ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। মাওলানা আনাস মাদানীসহ কয়েকজন শিক্ষকের কক্ষে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীকে মাদ্রাসার ভেতরে পেয়ে মারধর করেন ছাত্ররা। আহত অবস্থায় তিনি এখন চট্টগ্রামের শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ছাত্রদের বিক্ষোভে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে বুধবার রাতে মাদ্রাসার শূরা কমিটি মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষাসচিব, মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর ছেলে। সেই সঙ্গে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক।
বিক্ষোভের শুরু থেকেই ছাত্ররা মাদ্রসার মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় মাদ্রাসার বাইরে গেটের সামনে অবস্থান নেন র্যাব ও পুলিশের সদস্যরা।