সরকার ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ করে দিলেও ৯ দিনে তার প্রভাব খুব একটা পড়েনি বাজারে। পূর্বের ন্যায় বর্ধিত মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে কিছু মুনাফাবাজ ব্যবসায়ী তেলের দাম দফায় দফায় বাড়িয়ে দেয়ায় এখনও এর মাশুল গুনছে সাধারণ মানুষ।
খুলনা নগরীর খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, বিভিন্ন ব্রান্ডের ৫ লিটারের সয়াবিন ৬৩০ থেকে ৬৮০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৩৫ টাকায় এখনো বিক্রি হচ্ছে।
অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৭ ফেব্রুয়ারির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন (খোলা) মিলে গেটে ১০৭ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ১১০ টাকা আর খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা বিক্রি করার কথা। বোতলজাত সয়াবিনের মিল প্রতি লিটার গেট মূল্য ১২৩ টাকা, পাইকারি মূল্য ১২৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন মিলগেট মূল্য ৫৮৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৬০০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ৬২৫ টাকা নির্ধারিত হয়। আর পাম সুপার তেল প্রতি লিটার মিল গেটে মূল্য (খোলা) ৯৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৯৮ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নগরীর বাবুখান রোডের রহমত স্টোরের কর্মকর্তা জানান, সরকার নির্ধারিত দরে তেল বিক্রি করা সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাড়তি দরে তাদের তেল ক্রয় করা রয়েছে।
নিরালা বাজার এলাকার সবুজ স্টোরের মালিক জানান, তিনি আগের দরে তেল বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, তেলের দাম কমানোর জন্য শুধু সরকারের ঘোষণা দিলে হবে না তাকে বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে। সরকারের প্রতিনিধিদের মাঠে নেমে বাজার মনিটরিং করতে হবে। তা না হলে এ সংকট কখনো কাটবেনা।
মৌলভীপাড়া সাহেব আলী মোড়ের এসবি স্টোরের মালিক আকবর হোসেন জানান, সরকার ইচ্ছা করলে সবকিছু করতে পারে। সিন্ডিকেট করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আগে থেকে তেল মজুদ করে রেখে বাজারকে অস্থির করে রেখেছে।
শুক্রবার আসাদ স্টোরে কথা হয় গৃহিনী আসামা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, যে তার প্রতিমাসে আট লিটার তেলের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে গত দু’মাস ধরে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি মাসে দু’বার করে তেল ক্রয় করতে আসেন। কারণ আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন মিল খুঁজে পাচ্ছেন না। তাছাড়া তিনি প্রশাসনকে প্রত্যেকটা মোড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় মূল্যের তালিকা টানানোর অনুরোধ করেন।
খুলনা সিটি কলেজের এক প্রাক্তন শিক্ষক বলেন, তেলের বাজারে কারিসাজি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এর আগে কারিসাজি করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছিল ব্যবসায়ীরা, এবার তারা তেলকে বেছে নিয়েছে। তিনি জনসাধারণের কথা বিবেচনা করে সরকারকে এ কারিসাজি ভাঙ্গার আহবান জানান। তা না হলে এ সংকটের কোন সমাধান হবে না বলে তিনি মনে করেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি