আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাতময় পরিস্থিতি ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিএনপির সাবেক মহাসচিব সালাম তালুকদারের স্মরণে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
‘ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ’-এর উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এজন্যে এখন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়েছে। শুধু একটি জায়গা না, শুধু বরিশাল না। অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি যে, প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটা সংঘর্ষ হচ্ছে, সংঘাত হচ্ছে। এটা একটা লক্ষণ যে, বাংলাদেশ বর্তমানে রাষ্ট্র হিসেবে যে ব্যর্থ হচ্ছে তার লক্ষণ এটা।’
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমাদেরকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে একটা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাদেরকে বাধ্য করতে হবে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের মধ্য দিয়ে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের ব্যর্থতার কারণে করোনাকে এখানে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। আজকে অর্থনীতি নিচের দিকে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না, মানুষ দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরও ধীরে ধীরে রসাতলের দিকে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার কোনো গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না। তারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে না। শুধু তারা নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্যে এবং একদলীয় একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্যে।’
স্মৃতি সংসদের সভাপতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, স্মৃতি সংসদের এম সিরাজুল হক, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সুলতান মাহমুদ বাবু, নিলুফার চৌধুরী মনি, ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ওয়ারেস আলী মামুন, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এম তোজাম্মেলন হোসেন, শামসুজ্জামান মেহেদী, প্রয়াত ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের জামাতা মাহমুদুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ভার্চুয়াল আলোচনায় ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের সহধর্মিনী মাহমুদা সালাম, একমাত্র কন্যা সালিমা বেগমসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/কেএম