আফগানিস্তান বিষয়ক জাতিসংঘের সাবেক বিশেষ দূত পিটার গ্যালব্রেইথ বলেছেন, আফগানিস্তান সরকারের দ্রুত পতন সেদেশের সরকারের ওপর জনগণের আস্থার অভাব আর দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতিকে প্রমাণ করছে।
‘সরকারি বাহিনীর তুলনায় তালেবানের বাহিনী অনেক ছোট। সরকারি বাহিনীর মতো তাদের কাছে আধুনিক কোন অস্ত্রশস্ত্রও নেই, তাদের কোন বিমান বাহিনীও নেই,’ বিবিসি গ্লোবাল নিউজওয়্যারকে তিনি বলেছেন।
‘কিন্তু সরকারে এত দুর্নীতি হয়েছে যে, পুলিশ আর সৈনিকরা মাসের পর মাস বেতন পায়নি। তাদের ঠিকমতো গুলি ও খাবার সরবরাহ করা হয়নি। সুতরাং যখন পতন শুরু হয়, এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তাদের কেউ লড়াই করতে চায় না এবং এমন যুদ্ধে মারা যেতে চায় না, যেখানে এর মধ্যেই পরাজয় হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ২০ বছর ধরে চলা এই সামরিক অভিযানের ব্যর্থতার জন্য কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট দায়ী,তা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।
তার মতে, আমেরিকার আফগানিস্তান সমস্যা শুরু হয়েছে তখন থেকে, যখন স্থানীয় নর্দান অ্যালায়েন্সের পক্ষে তালেবানকে সরিয়ে দিতে আমেরিকা অংশ নিতে শুরু করে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে, আফগান দূতাবাসের সব কর্মীকে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের একটি ভবনে সরিয়ে আনা হয়েছে।
দফায় দফায় মার্কিন কর্মীদের বিমানে করে সরিয়ে আনা হচ্ছে। কর্মীদের সরিয়ে আনার এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে অতিরিক্ত প্রায় ছয় হাজার সেনা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সৈন্যরা বিমানবন্দর পাহারা দিচ্ছে।
অন্যদিকে ৬০টির বেশি দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা যদি আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে চায়, তাহলে তাদের যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে। সেইসঙ্গে তাদের জন্য বিমানবন্দর ও সীমান্ত খোলা রাখতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাতে এ খবর জানানো হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, কাতারসহ ৬০টির বেশি দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘আফগানিস্তানে যারা কর্তৃত্ব ও ক্ষমতায় রয়েছে, তারা মানুষের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা এবং অবিলম্বে নিরাপত্তা ও নাগরিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য দায়বদ্ধতা বহন করবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম