খুলনা, বাংলাদেশ | ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  সীমান্ত হত্যা যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম
  রাজধানীর ভাটারায় গ্যাস লিকেজে বিস্ফোরণ : দগ্ধ যুবকের মৃত্যু

সরকারি অনুদান পাচ্ছে ৩২ টি সিনেমা

গেজেট ডেস্ক

সরকারি অনুদান পাচ্ছে ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ২০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ও তথ্যচিত্র। ২০২৪-২৫ সালের এই সরকারি অনুদান পাচ্ছে সিনেমা ও তথ্যচিত্রগুলি। গত মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুদান প্রদানের তথ্য জানান। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘জুলাই নিয়ে দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং আটটি শর্ট ফিল্ম ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হবে সরকারি অনুদানে।’

৩০ জুন ছিল অর্থবছরের শেষ দিন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুদানপ্রক্রিয়া শেষ করতে গত শনি ও রোববার অনেকটা তাড়াহুড়া করে আবেদনকারী নির্মাতা ও প্রযোজকদের ‘পিচিং’–এর জন্য ডাকা হয়। সবাই এক দিন করে প্রস্তুতির সময় পান। পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবির পিচিংয়ের দুই দিন ও স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবির এক দিন পরই চূড়ান্ত করা হয় অনুদানের সিনেমার তালিকা।

তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শারমিন আখতার স্বাক্ষরিত ৩০ জুনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘চলচ্চিত্রশিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠীর আবহমান সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্যে শিল্পমানসমৃদ্ধ ও বহুস্বর বিবৃত করে, এমন পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে অনুদান কমিটির সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ২ জুলাই রাতে প্রকাশ্যে আসে এই প্রজ্ঞাপন।

প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, ৩২টি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ৯ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান দেওয়া হবে ৭৫ লাখ টাকা। এই শাখায় অনুদান পাবেন ১২ জন প্রযোজক। ঘোষণামতো স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ২০ সিনেমার ২০ প্রযোজক পাবেন ২০ লাখ করে টাকা।

পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে শিশুতোষ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘রবিনহুডের আশ্চর্য অভিযান।’ এটির প্রযোজক জগন্ময় পাল। প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে অনুদান পেয়েছে প্রযোজক লাবিব নাজমুস শাকিবের ‘মায়ের ডাক।’ ‘রাজনৈতিক ইতিহাস তথা আবহমান বাংলার সব রাজনৈতিক অভ্যুত্থান, আন্দোলন ও বিপ্লব—যা এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের নিয়ামকসংক্রান্ত শাখা’য় অনুদান পেয়েছে ‘জুলাই।’ এটির প্রযোজক মাহমুদুল ইসলাম। ‘সাংস্কৃতিক ইতিহাস তথা বাংলার ঐতিহ্য, মিথ ও ফোকলোর’ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘রুহের কাফেলা।’ সিনেমাটির প্রযোজক আহমেদ হাসান সানি।

পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে সাধারণ শাখায় অনুদান পেয়েছে আটটি সিনেমা। ‘পরোটার স্বাদ’ (সিংখানু মারমা), ‘খোঁয়ারি’ (সৈয়দ সালেহ আহমেদ), ‘জীবন অপেরা’ (আলভী আহমেদ), ‘জলযুদ্ধ’ (গোলাম সোহরাব দোদুল), ‘কবির মুখ দ্য টাইম কিপার’ (মুশফিকুর রহমান), ‘কফিনের ডানা’ (আনুশেহ আনাদিল), ‘নওয়াব ফুজুন্নেসা’ (সাহিবা মাহবুব) ও ‘জুঁই’ (সুজন মাহমুদ)।

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে শিশুতোষ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘মন্দ-ভালো।’ এটি প্রযোজনা করেছেন মাহবুব আলম। প্রামাণ্যচিত্র শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘ফেলানী’ (সাব্বির), ‘ঝুঁকির মাত্রা’ (আক্তার তাফজিরা রহমান সামিয়া), ‘জীবনের গান’ (জাহিদ হাসান)। আবহমান বাংলার সব রাজনৈতিক অভ্যুত্থান, আন্দোলন ও বিপ্লব নিয়ে তিনটি সিনেমা অনুদান পাচ্ছে। অভীকচন্দ্র তালুকদার প্রযোজিত ‘হু হ্যাজ মেইড আস ফ্লাই’, সাইদুল আলম খানের ‘ভরা বাদর’, সালমান নূরের ‘১২৩০।’ বাংলার ঐতিহ্য, মিথ ও ফোকলোর–সংক্রান্ত শাখায় অনুদান পেয়েছে বৃন্দারাণীর ‘আঙুল।’ এটি প্রযোজনা করেছেন শুভাশিস সিনহা।

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে সাধারণ শাখায় অনুদান পেয়েছে ১০টি সিনেমা। এগুলো হলো ‘একটি সিনেমার জন্য’ (সাদমান শাহরিয়ার), ‘দাফন’ (সাইদুল ইসলাম), ‘সাঁতার’ (মোহাম্মদ ইফতেখার জাহান নয়ন), ‘মাংস কম’ (নোশিন নাওয়ার), ‘গগন’ (সুমন আনোয়ার), ‘অতিথি’ (আবিদ মল্লিক), ‘বোবা’ (সালজার রহমান), ‘অদ্বৈত’ (সাদিয়া খালিদ), ‘আশার আলো’ (আরিফুর রহমান), ‘গর্জনপুরের বাঘা’ (মনিরুজ্জামান), ‘হোয়ার দ্য ওয়াটার স্লিপস’ (তছলিমা আক্তার নূপুর) এবং ‘অপসময়’ (নাসরুল্লাহ মানসুর)।

পিচিং নিয়ে যা বলছেন নির্মাতারা- এবার পূর্ণদৈর্ঘ্য শাখায় ১৮৯টি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য শাখায় ১৪০টি ছবি জমা পড়ে। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর ৯০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ৮৮টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের প্রযোজক–পরিচালককে পিচিংয়ের জন্য ডাকা হয়। একসঙ্গে এতসংখ্যক আবেদনকারীকে পিচিংয়ে ডাকার কারণে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে পিচিং। সোহেল রানা নামের একজন পরিচালক বলেন, ‘পিচিংয়ের জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছিল, সেটা কম সময়। এত অল্প সময়ে কোথাও পিচিং হয় না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পরিচালক বলেন, ‘একটি সিনেমার পিচিং তিন মিনিট! যে প্রেজেন্টেশন তৈরি করছি, কিছুই কেউ দেখছেন না। এক প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই আরেক প্রশ্ন। পরে বলল, এখন আসুন। এভাবে কোনো সিনেমার পিচিং হতে পারে না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য অতিরিক্ত সচিব কাউসার আহাম্মদকে ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি।

খুলনা গেজেট/এসএস




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!