খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

সময় টিভি ও এএফপির প্রতিবেদন ইস্যুতে হাসনাত আব্দুল্লাহ’র স্ট্যাটাস

গেজেট ডেস্ক

সময় টিভির সাংবাদিক বরখাস্তে নেপথ্য কারণ এবং এ বিষয়ে এএফপির দায়িত্বহীন প্রতিবেদন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটের দিকে এই স্ট্যাটাস দেন তিনি।

পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএফপি রিপোর্ট করে যে, সময় টিভির কয়েকজন সাংবাদিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, প্রতিবেদনে ঘটনাটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন সিটি গ্রুপকে, যারা টেলিভিশন স্টেশনটির মালিক, তাদের নিজস্ব সাংবাদিকদের বরখাস্ত করতে বাধ্য করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু এটি একেবারেই সত্য নয়।’

পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘আমরা সম্প্রতি সিটি গ্রুপের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম তাদের মালিকদের কাছে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাতে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সময় টিভির সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আমরা এই প্রতিবাদ জানাই। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় দুই হাজার মানুষ, যার মধ্যে শত শত শিক্ষার্থী ছিলেন, নিহত হয়। ওই সময় প্রতিবাদগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ। তবুও, প্রতিবাদকারীদের প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’

হাসনাত জানান, অনেক টিভি স্টেশন, পত্রিকা, এবং নিউজ সাইট এই গণঅভ্যুত্থানের সময় সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালা মানেনি। তারা শিক্ষার্থী এবং প্রতিবাদকারীদের ‘সন্ত্রাসী’, ‘অপরাধী’ এবং ‘ইসলামপন্থী চরমপন্থী’ বলে উল্লেখ করে তাদের মানবিক মর্যাদা হরণ করেছে এবং তাদের প্রতিবাদের অধিকারকে অস্বীকার করেছে। এ ছাড়াও, তারা হাসিনার নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন এবং বৈধতা দিয়েছে। সময় টিভি এই অপপ্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘প্রকৃতপক্ষে, এই ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেলটি গত ১৬ বছরে হাসিনার মানবতাবিরোধী সব অপরাধ, যেমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, এবং বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক দমনমূলক অভিযান, এগুলোকে সমর্থন ও বৈধতা দিয়েছে। সময় টিভি শীর্ষ ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে শহিদুল আলম, ডেভিড বার্গম্যান, লিসা গাজী, এবং এএফপি ফ্যাক্ট চেক সম্পাদক কাদরুদ্দিন শিশিরও রয়েছেন।

হাসনাত লেখেন, ‘এএফপি তাদের প্রতিবেদনে, ঘটনাটি এমনভাবে তুলে ধরে যেন আমরা সিটি গ্রুপে ‘প্রবেশ’ করেছি, অথচ বাস্তবে আমরা বৈধভাবে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে সেখানে গিয়েছিলাম। এএফপি সময় টিভির বিতর্কিত ভূমিকার প্রায় কোনো উল্লেখ করেনি, যারা ১৬ বছর ধরে প্রতিবাদকারীদের মানবিক মর্যাদা হরণ এবং হাসিনার নৃশংস অপরাধগুলো বৈধতা দিয়েছে। এটা দুঃখজনক যে, এএফপি সময় টিভির সাংবাদিকদের ‘ভুক্তভোগী” হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে, যেন তারা নাৎসি যুগের একটি প্রচার মাধ্যম।’

‘আমরা পুনরায় উল্লেখ করতে চাই যে, আমরা সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় তাদের জনবিরোধী ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছি। আমরা মালিকদের কাছে কোনো সাংবাদিকের বরখাস্তের তালিকা জমা দিইনি। আমরা টিভি স্টেশনের কোনো শেয়ারের দাবিও করিনি। আমাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। আমি মনে করি, এগুলো আমার বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচারমূলক অভিযানের অংশ, যা আগে থেকেই সময় টিভি চালিয়ে এসেছে।’

‘আমরা বারবার বলেছি যে, আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি যারা হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন এবং সেই সমস্ত সাংবাদিকদের প্রতি যারা সাহস করে হাসিনার রক্তপিপাসু বাহিনীর সামনে সত্য প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের স্যালুট জানাই। আমরা বিদেশি গণমাধ্যমের ভূমিকাকেও সম্মান জানাই, যারা বিপ্লবের সময় সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছে।’

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!