খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা, আদায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা

সংকটের অজুহাতে খোলা বাজারে ডলার ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা

গেজেট ডেস্ক

খোলা বাজারে ডলার সংকটের অজুহাতে এবং ব্যাংকে ডলারের উচ্চমূল্যের প্রভাবে খোলা বাজারে ডলারের দামে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। এদিন বাজারে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার বিক্রি হয়েছে। একদিন আগেও এই দর ছিল ১২২ টাকা। এর আগে দীর্ঘদিন ১১৯-১২০ টাকায় ছিল খোলা বাজারে ডলারের দর।

ব্যাংক ও খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় হারের পার্থক্য গত বেশ কিছুদিন স্বাভাবিক থাকার পর হঠাৎ করেই গতকাল তা বাড়তে শুরু করেছে। ব্যাংকগুলোতে ডলার ১২৪ টাকা থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হওয়ায় খোলা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা থেকে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী, এখন খোলা বাজারে প্রতি ডলারের দাম ১১৫ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে থাকার কথা।

ব্যাংকগুলোতে আবারও ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজনীয় ডলার পাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই তারা ডলারের প্রয়োজেনে খোলা বাজারে যাচ্ছে। আর এ সুযোগে ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দেশের খোলা বাজারে ডলারের দাম আবারও বেড়েছে।

খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, খোলা বাজারে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে। প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকরাও কম আসছেন। এ ছাড়া চলমান অবরোধে ভয়ে কেউ ডলার নিয়ে আসছেন না। এসব কারণে ডলারের সরবরাহ অনেক কম। এ ছাড়া খোলা বাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়। যে কারণে অনেকে এখন খোলা বাজার থেকে ডলার কিনতে আসেন। ফলে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। তাই আমাদের বেশি দরে কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দরেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্ণধার কালবেলাকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় ডলার কিনেছি। আর বিক্রি করেছি সর্বোচ্চ ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়।

খোলা বাজারে ডলারের দর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল শিকদার কালবেলাকে বলেন, ব্যাংকের ডলারের দর অনেক বেড়ে গেছে। ফলে খোলা বাজারে চাহিদাও বেড়ে গেছে। কিন্তু অবরোধসহ বিভিন্ন কারণে খোলা বাজারে ডলারের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। আবার অনেক ব্যবসায়ী আরও দাম বাড়তে পারে সেই আশায় ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। এসব কারণেই হয়তো দামটা একটু বেশি হয়েছে। তবে ব্যাংকের দর দু’এক দিনের মধ্যে কমে গেলে খোলা বাজারেও তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। স্বাভাবিক না হলে তখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোলা বাজারে ডলারের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুত কম, ডলারের দাম নির্ধারণ ও বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে রেমিট্যান্স প্রবাহে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। এই অবস্থায় খোলা বাজারে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ও খোলা বাজারে ডলার কেনাবেচা বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কেননা খোলা বাজারে দাম বেড়ে গেলে অবৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে যায়। আবার অবৈধ পথে আয় আসা বেড়ে গেলে অর্থ পাচারও বেড়ে যায়। তাই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে কেউ সুযোগ নিচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

এর আগে, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করায় সাত মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি একই কারণে আরও ১০ মানি চেঞ্জারের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে ৬টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের ক্ষমা প্রার্থনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের লাইসেন্স প্রত্যাহারের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!