আফাগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দিয়ে শনিবার (২৭ আগস্ট) পর্দা উঠছে এশিয়া কাপের ১৫তম আসরের। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় মাঠে নামবে দুদল।
এদিকে সাম্প্রতিক ফর্ম আর দলের শক্তিমত্তা বিবেচয়ানয় এবারের এশিয়া কাপে দুই হট ফেভারিট ভারত-পাকিস্তান। শক্তিমত্তায় এই দুইদলের থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও শিরোপা ঘরে তোলার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা, এমনটাই বলেছেন ভানুকা রাজাপাকশে।
এর আগে ২০১৮ সালে গত আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল আরব আমিরাতেই। সেবার ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ ও ভারত। টাইগাররা ৩ উইকেটে সে ম্যাচটি হেরেছিল। এবারের আসরে এশিয়ার মোট ৬টি দল অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং- এ ছয় দেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ। হংকং সুযোগ পেয়েছে বাছাইপর্ব খেলে। বাকি ৫টি দল সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে আগেই। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, সিঙ্গাপুর ও হংকংকে নিয়ে ২০ আগস্ট ওমানে বাছাইপর্ব শুরু হয়েছিল।
সেই বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছে হংকং। গ্রুপ ‘এ’তে ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গে আছে হংকং। গ্রুপ ‘বি’তে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সঙ্গে আছে আফগানিস্তান। দুই গ্রুপের প্রতিটি দল একে অন্যের সঙ্গে একটি করে ম্যাচ খেলবে। প্রতিটি গ্রুপের সেরা দু’দল উঠবে সুপার ফোরে।
যেখানে প্রতিটি দল আবার অন্য দলগুলোর মুখোমুখি হবে একবার করে। এদিকে এ আসরের আগে ২০১৬ সালে একবার টি-টোয়েন্টির এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া কাপের দুদিন পরই শুরু হয়েছিল সে বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সে কথা মাথায় রেখে সংস্করণ পরিবর্তন করা হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স বিচারে এই টুর্নামেন্টে তাদের খুব বেশি আশা করার সু্যোগ নেই। পরিসংখ্যান বলছে, এই ফরম্যাটে সর্বশেষ তিনটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সবকটিতেই হেরেছে দাসুন শানাঙ্কার দল। এই সময়ে খেলা ৯ ম্যাচে ৭ হারের বিপরীতে লঙ্কানদের জয় কেবল মাত্র দুইটিতে।
নিজেদের পারফরম্যান্স যাই হোক, আত্মবিশ্বাসে কোনো কমতি নেই লঙ্কান শিবিরে। আসন্ন এশিয়া কাপে লঙ্কানদের অন্যতম ভরসার নাম রাজাপাকশে। নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে ভালো কিছু করার প্রত্যয় এই হার্ড হিটার ব্যাটারের কণ্ঠে।
রাজাপাকশে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য শিরোপা জয়ের দারুণ সুযোগ। আশা করছি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের সামর্থ্য প্রমাণ করে শিরোপা অর্জন করব।’
শুধুই রাজাপাকশে নয়, দলটির প্রধান কোচ ক্রিস সিলভারউডও বেশ আত্মবিশ্বাসী। তিনি মানেন যে, গ্রুপ পর্বের অপর দুই দল বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানও বেশ শক্তিশালী দল। তারপরও নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে জয় সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
সিলভারউড বলেন, ‘অবশ্যই আফগানিস্তান ভয়ংকর দল। প্রত্যেক দলই এখানে ভয়ংকর। টি-টোয়েন্টি যেকোনো দিন যে কেউ জিততে পারে। আমাদের সব দলকেই সমান সম্মান করতে হবে। এই টুর্নামেন্টে প্রতিটি দলই শক্তিশালী। প্রত্যেক ম্যাচেই জয় আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ- প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন।’
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বকাপের ফরম্যাটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এশিয়া কাপের সংস্করণ নির্ধারণ হবে, সে জন্যই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবারের আসরটি হচ্ছে ক্রিকেটের ছোট সংস্করণের। উল্লেখ্য, এশিয়া কাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ৩৮ বছর আগে, ১৯৮৪ সালে।
সেবার এ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ৩টি দল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। রাউন্ড রবিন পদ্ধতির সেই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সুনীল গাভাস্কারের ভারত। আর শ্রীলঙ্কা হয়েছিল রানার্সআপ। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় আসরে।
সেবার শ্রীলঙ্কার সঙ্গে রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় ভারত। যে কারণে সেবারও দল ছিল ৩টি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। গাজী আশরাফ হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সবগুলো ম্যাচই হেরেছিল। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে চার দল অংশ নিয়েছিল ১৯৮৮ সালে।
বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ আয়োজন করে সেবারই। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত এশিয়া কাপ আয়োজনের ধারাবাহিকতা ছিল না। তবে এর পর থেকে দুবছর পরপরই এ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে এসিসি। যদিও ২০২০ কোভিডের কারণে এশিয়া কাপ মাঠে গড়ায়নি।