গত ৯ মে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হামলার ঘটনায় শ্রীলঙ্কার সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্যসহ ২২ জনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর জানায়, অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশনা অনুযায়ী হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে মঙ্গলবার (১৭ মে) সিআইডিকে নির্দেশ দেন আইজিপি।
গত ৯ মে গলে ফেস ও টেম্পল ট্রিসের সামনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সংসদ সদস্য জনস্টন ফার্নান্দো, সানাৎ নিশান্থা, সঞ্জীবা এদিরিমান্নে, মিলান জয়তিলাকেসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করতে সোমবার (১৬ মে) আইজিপি ও সিনিয়র ডিআইজিকে নির্দেশনা দেন শ্রীলঙ্কার অ্যাটর্নি জেনারেল।
ওই ঘটনায় পুলিশ ও অ্যাটর্নির অফিস থেকে আলাদা তদন্তের পর এ নির্দেশনা দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সিআইডিকে আরও তদন্ত করে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন আইজিপি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন তিনি। এরই মধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে সংকটাপন্ন শ্রীলঙ্কায় ফুরিয়ে গেছে পেট্রল, জরুরি আমদানিতে অর্থায়নের জন্য নেই ডলারও। সোমবার (১৬ মে) জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা জানান দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
দেউলিয়া হওয়া শ্রীলঙ্কা আগামী কয়েক মাস আরও দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে পেট্রল ফুরিয়ে গেছে। এ মুহূর্তে আমাদের কাছে শুধু একদিন ব্যবহার করার মতো পেট্রল মজুত আছে।
রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতিতে সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের অভাবে ভুগছে শ্রীলঙ্কার ২কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ।
বিক্রমাসিংহে বলেন, আগামী কয়েক মাস আমাদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় হবে। সত্য আড়াল করা এবং জনগণের কাছে মিথ্যা বলার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
তবে জনগণকে আগামী কয়েক মাস ‘ধৈর্য’ ধরার আহ্বান জানিয়ে, এ সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের প্রায় ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীকে মে মাসের বেতন দেয়ার মতো নগদ অর্থও নেই শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে। ফলে শেষ অবলম্বন হিসেবে নতুন নোট ছাপানোর কথা জানিয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় খাতের কর্মচারীদের বেতন দিতে এবং প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবার জন্য আমি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অর্থ ছাপানোর অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি।
শ্রীলঙ্কায় গত সপ্তাহে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অন্তত ৪০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে রোববারই (১৫ মে) আটক করা হয় ১৫৯ জনকে। অন্যদিকে বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে কারফিউ তুলে নেয়া হলেও শ্রীলঙ্কাজুড়ে আবার জারি করা হয়েছে কারফিউ।