সাতক্ষীরার শ্যামনগরের একটি চালের আড়ৎ থেকে ৭৫ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১ জুন) রাতে উপজেলার নূরনগর বাজারের পুরাতন মৎস্য আড়ৎ সংলগ্ন আল্লাহর দান চাউলের আড়ৎ থেকে এই চাল জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।
খাদ্য অধিদপ্তরের মনোগ্রামযুক্ত সরকারি বস্তা পরিবর্তন করে এসব চাল বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করেছিলেন নুরনগর বাজারের আল্লাহর দান চাউলের দোকানের মালিক শাহিনুর রহমান বকুল। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাতের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালগুলো জব্দ করে। পরে জব্দকৃত চাল স্থানীয় কয়েকটি মাদরাসা ও এতিম খানায় বিতরণ করা হয়।
এছাড়াও এ ঘটনায় সরকারি চাল সংরক্ষণ ও বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে আল্লাহর দান চাউলের দোকানের মালিক শাহিনুর রহমান বকুলকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা করা হয়।
ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান বকুল সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের শোকর আলী গাজীর ছেলে।
অবৈধভাবে সরকারি চাল মজুদকারী শাহিনুর রহমান বকুল বলেন, তিনি শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর এলাকার ধান ব্যবসায়ী আবু মুসা ও জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে ৩০ কেজি ওজনের ৭৫ বস্তা সরকারি চাল (১২৫০ টাকা বস্তা দরে) ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকায় কিনেছিলাম। রাতে অভিযানে এসে এসিল্যান্ড চালগুলো জব্দ করে নিয়ে গেছে।
তবে কাশিমাড়ি এলাকার ধান ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত বলেন, নুরনগর বাজারের একটি চাউলের দোকানে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির সরকারি চাল মজুদ রয়েছে এমন সংবাদে সেখানে অভিযানে যাই। সেখানে গিয়ে ৩০ কেজি ওজনের ৭৫ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করি। যেহেতু আল্লাহর দান চাউলের দোকানের মালিকের ৭৫ বস্তা সরকারি বস্তা পরিবর্তন করা চাল জব্দ করা হয়েছে সে কারণে তাকে জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ জাহিদুর রহমান বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত চাল বাজারে বিক্রি করা বা ব্যক্তিমালিকানাধীন গুদামে মজুদ রাখা বেআইনি।
অভিযানকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল রিফাতের সঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ শারিদ বিন শফিকসহ উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারী ও শ্যামনগর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে স্থানীয় মনিরুজ্জামান, জোবায়ের, হাফিজুর রহমান ও তাহমিনুর রহমান এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা বের করতে তদন্তের দাবি জানান।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম