সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ৭৪ নম্বর গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মৃদু চড় মারায় অভিভাবকদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মুজিবর রহমানের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বর্তমানে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গত ২৪ আগস্ট পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ক্লাস নেয়ার সময় আমি দাঁড়িয়ে হোয়াইট বোর্ডে লেখালেখি করছিলাম। সে সময় শিক্ষার্থীরা আমার বসার চেয়ারে সুপার গুলু আটা লাগিয়ে দেয় এবং আমাকে বসতে বলে। কিছুক্ষণ পরে আবার উঠতে বলেন আমি ওঠার সাথে-সাথে চেয়ার আমার পিছনে প্যান্টের সাথে আটকে যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা হাততালি দিতে থাকে। ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা সকলেই আমার অত্যন্ত স্নেহের। তারা যাতে আগামীতে এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকে সেই লক্ষ্যে আমি শিক্ষাগুরু হিসেবে কজন শিক্ষার্থীকে মৃদু চড় মারি। যথারীতি ক্লাস শেষ করে আমি বাড়ি চলে যাই।
পরদিন ২৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার ২ টা ৩০ মিনিটের দিকে শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে অফিসিয়াল কাজ শেষে ফিরে আসার সময় গোবিন্দপুর মুজিবর হাজির বাড়ির সামনে এসে পৌঁছালে পূর্ব থেকে সেখানে ওৎ পেতে থাকা শিক্ষার্থীর বাবা আলমগীর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মজিবর রহমান, সেকেন্দার আলীসহ ৪-৫ জন আমাকে বেধড়ক মারপিট করে এবং আমার কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি, স্কুলের জায়গা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে বিভেদ চলে আসছে। স্কুলের জায়গা উদ্ধার করার জন্য আমি চেষ্টা করায় আমাকে বিভিন্ন সময়ে মামলা হামলা দিয়ে হেনস্থ করে আসছে। যার ফলে আমাকে চাকরি করতে দেবে না বলে হুমকি ধামকি প্রদান করে তারা। এরই ধারাবাহিকত আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুত করার পায়তারা করা হচ্ছে যাতে করে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ তারা ভোগ দখল করতে পারে এবং অন্যত্র না যেতে পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হই।
এ ব্যাপারে স্কুলের সভাপতি বলেন বিষয়টা আমি শুনেছি আমি যতদূর বুঝেছি স্কুলের শিক্ষকদের সাথে ওনার বনিবনা হচ্ছে না। সে কারণে হয়ত এঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাবে বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান এ ঘটনা ইতিমধ্যে তদন্ত করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিডি অফিসে সুপারিশ করা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে শিক্ষক আবুল কাশেম। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস