খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ

শ্যামনগরে ফসলি জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলনের অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের অজুহাতে শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কৈখালী ইউনিয়নের জাদা গ্রামের ফসলী জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারের পক্ষে পাতড়াখোলা গ্রামের নুরুল ইসলাম ও আনছার আলী লোকজন নিয়ে টানা পনের দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের অজুহাতে কখালী ইউনিয়নের জাদা গ্রামের ফসলি জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ঠিকাদারের লোকজন ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে বোরিং করে উত্তোলন করে রাস্তার কাজে ব্যবহার করছেন। ওই সড়ক নির্মাণ কাজে প্রয়োজনীয় প্রায় দেড় লাখ ঘনফুট বালু ওই এলাকার ফসলী জমি থেকেই সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ফলে ভাঙ্গন কবলিত উপকূলীয় জনপদ থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের শংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাদা গ্রামের পাশের আমন ধানের ক্ষেত লাগোয়া পুকুরে দুটি ড্রেজিং মেশিন স্থাপন করে জমির তলদেশ হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত বালু মূলত কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণের জন্য ফিলিংয়ের কাজে ব্যবহার করছে সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত দুই হাজার নয়শ মিটার রাস্তা ভরাটের কাজে একই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হবে বলেও জানান তারা।

জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকার পর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসে এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সন্ন্যাসী ডাক্তারের বাড়ি হয়ে সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তায় কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুই হাজার নয় শত মিটার রাস্তার কাজ চলতি অর্থ বছরে সম্পন্নের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু বক্স কাটিংয়ের কাজ সম্পন্ন করেই স্যান্ড ফিলিং এর জন্য বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় বালু না এনে পাশের ফসলি জমির প্রায় সত্তর ফুট গভীর থেকে ড্রেজার মেশিনের সহায়তায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয় গ্রামবাসী আহম্মদ আলীসহ কয়েকজন জানান, ঠিকাদারের কাছ থেকে পাতড়াখোলা গ্রামের নুর ইসলাম ও আনছার আলী ওই রাস্তার স্যান্ড ফিলিং এর কাজ সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়েছে। সাড়ে ছয় টাকা ঘন ফুট হিসেবে চুক্তি মোতাবেক তারা রাস্তার কাজের জন্য বালু সরবরাহের দায়িত্ব নিলেও এখন পাশের জমি থেকে বালু উত্তোলন করছে। কয়েকজন জমির মালিককে দেড় টাকা ফুট হিসেবে অগ্রীম টাকা পরিশোধ করে নুর ইসলাম ও আনছার আলী নিজেদের লোকজন নিয়ে দিন রাত ধরে দু’টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। কয়েকজন জমির মালিক টাকা নিতে সম্মত না হওয়ায় রাস্তার কাজে বালু উত্তোলনের সুযোগ দিতে তাদের উপর নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান কয়েকজন। সবাইকে ম্যানেজ করেই সেখানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন নিয়ে কথা বললে তাদেরকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে।

এদিকে বালু উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা নুর ইসলাম বলেন, কাউকে কোন হুমকি দেয়া হয়নি। উন্নয়ন কাজের স্বার্থে পাশের জমি থেকে বালু নেয়া হচ্ছে। অনেক জায়গায় বালু পাওয়া যাচ্ছে না উলে­খ করে তিনি বলেন, সাড়ে ছয় টাকায় চুক্তির বালু দশ কিলোমিটার দূর থেকে এনে পোষাবে না। বালু উত্তোলন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয় নুর ইসলাম ও আনছার আলী বালু সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছে। তবে কোথা থেকে বালু দিচ্ছে বা দিবে তা আমার জানা নেই।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!