খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ পৌষ, ১৪৩১ | ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আরও ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
  রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
  দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত : আইইডিসিআর

শ্যামনগরে খোলপেটুয়ার বাঁধ ভেঙ্গে ৪ গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভাঙ্গন পয়েন্টের আশেপাশের অন্তত চারটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজারো চিংড়ি ঘের।

খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের তোড়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গাবাটি এলাকায় আগেই ভাঙ্গন ধরা পাউবো’র বেড়িবাঁধের ১৫০-১৬০ ফুট অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি ঢুকে ওই ইউনিয়নের চারটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নদীতে ফের জোয়ার শুরু হলে উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা, পশ্চিম ও পূর্ব দূর্গাবাটি, আড়পাঙ্গাশিয়া, বুড়িগোয়ালিনীর আংশিকসহ কয়েকটি গ্রাম চোখের সামনেই প্লাবিত হয়। নদীর লোনা পানিতে ওই এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বাগদা চিংড়ির ঘের প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গাবাটির জীর্ণশীর্ণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়। যা রাতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন লোকালয়ে নদীর পানি প্রবেশ করছে। এইভাবে নদীর পানি ঢোকা অব্যহত থাকলে রাতের জোয়ারে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে।

দুর্গাবাটি গ্রামের নিলুৎপল মন্ডল জানান, শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকায় সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর আওতাধীন ৫ নং পোল্ডারের উপকূল রক্ষা বাঁধের প্রায় দেড়শ ফুটেরও বেশী এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধের অর্ধেক অংশ খোলপেটুয়া নদীতে ধ্বসে পড়ে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকার সাইক্লোন শেল্টার সংলগ্ন অংশের ওই বাঁধের এই ধ্বস দেখা দেয়। এসময় সম্পূর্ন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকায় আশপাশের এলাকাজুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত অংশে মাটি ফেলার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। কিন্তু তাৎক্ষনিক বাঁধ রক্ষার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে রাতের জোয়ারে ওই বেড়িবাঁধ সম্পূর্ন ভেঙ্গে যায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পাউবো’র বেড়িবাঁধের ওই অংশে সংস্কার কাজের সময় গুনগত মান রক্ষা করা হয়নি। যে কারণে বাঁধের অর্ধেক দেবে যাওয়া চরের উপরিভাগের বাঁধ নদীতে ধসে গেছে। দ্রুত রিং বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে মধ্য রাতের জোয়ারে তদসংলগ্ন আরো ৫/৬টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শংকা রয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দুর্গাবাটির বিভিন্ন অংশে কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ভাঙনকৃত অংশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাটির কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়া প্রভাবশালীরা পাশের নদী হতে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করায় চর দেবে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তদারকি করেননি।

বুুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করেছে। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। জোয়ার নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় কাজ করা কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পার্শবর্তী অংশের বাঁধে ভাঙ্গন লেগেছে।

পাউবোর সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র মোঃ জাকির হোসেন জানান, ভাঙ্গনকবলিত বাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বস্তা, দঁড়ি, বাঁশ, পেরেক সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া গতকাল ১৩০ ফুট এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিলেও রাতে ১৫০-১৬০ ফুট নদীগর্ভে চলে গেছে। সেক্ষেত্রে ৫৫০ ফুট এলাকায় পাইলিং করার জন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দুপুরের জোয়ারে সেটি করা সম্ভব না হলেও আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় বিকালে পাইলিং এর কাজ শুরু করবো।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!