আগস্ট মাস, শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির জাতীয় জীবনে নেমেছিল কালরাত। সেদিন জাতি হারিয়েছে জাতির জনক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, সপরিবারে তাঁকে হত্যা করা হয়। নির্মম এই হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি নারী-শিশুও। এমনকি বঙ্গবন্ধুর আত্মীয়-স্বজনদেরও হত্যা করা হয় খুঁজে খুঁজে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে তো বটেই, গোটা বিশ্বে এ এক নজিরবিহীন ঘটনা। শোকাবহ আগস্ট মাস শুরু হলো আজ মঙ্গলবার।
স্বাধীন বাংলাদেশে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধুসহ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার সহধর্মিণী আরজু মণি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়কে হত্যা করে।
পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে দীর্ঘ ২১ বছর। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে শুরু হয় বিচারিক প্রক্রিয়া। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। বিচার শেষে ২০১০ সালে কার্যকর করা হয় ঘাতকদের ফাঁসির রায়। এর মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়।
শোকের মাস আগস্টেই বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় ২০০৪ সালে। ওই বছরের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শান্তি সমাবেশে তার ওপর গ্রেনেড হামলা করা হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। সেদিন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং ৫ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
প্রতি বছর আগস্টকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে সরকারিভাবে পালিত হয়। এবার ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করবে আওয়ামী লীগ।
খুলনা গেজেট/কেডি