সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত ‘বিগ ব্রাদারসুলভ’ আচরণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলাস্থ চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার বসে নেই। বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী দেশের একটা স্টেটমেন্ট দেখছেন, তারা স্পষ্ট ভাষায় বলছে শেখ হাসিনা সেখানেই আছেন। ভারতের সঙ্গে তো আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যর্পণ বিষয়টি সমাধান করে তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। আর তা না হলে বাংলাদেশে যতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আছে তারা সেখানে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ নেবে। বিভিন্ন দেশে এভাবে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ পাবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সর্বশ্রেষ্ঠ শীর্ষ সন্ত্রাসী ও খুনি। যে শিশুর রক্ত পান করতে পারে তার মতো শীর্ষ সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে। তাকে আশ্রয় দেয়া মানে অপরাধকে আশ্রয় দেওয়া। অন্যায়কে আশ্রয় দেয়া, খুনিকে আশ্রয় দেয়া। বৃহস্পতিবার তাদের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিগ ব্রাদারের মতো আচরণ করছে। সেখান থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
রিজভী বলেন, ‘এখনও স্বৈরাচারের হিংস্র থাবা থেকে মুক্ত হতে পারছি না। বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে ৫০-৬০টি জেলায় শাটডাউন করা হয়েছে। এরা কারা? আমরা কিন্তু প্রায় দিনই বলেছি, স্বৈরাচারের দোসররা ভেতরে আছে, এরা কিন্তু নাশকতা করবে। গতকাল সে ঘটনা ঘটিয়েছে এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা কিন্তু কয়েকবার বলেছি। তাদের দাবি দাওয়া থাকলে সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করতে পারতো। কিন্তু তারা তা না করে গতকাল শাটডাউন করলো কেন? কারণ এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, এটি নাশকতা। তারা শেখ হাসিনার আমলে এ কর্মসূচি নেয়নি কেন? কারণ এরা শেখ হাসিনার অনুচর।’
তিনি বলেন, ‘এ কর্মসূচির সঙ্গে যারা জড়িত তারা সরাসরি শেখ হাসিনার লোক। কথিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ভৌতিক অস্তিত্ব নিয়ে ভেতরে ঢুকে আছে। এ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সরকারকে বলছি, আরও বেশি সতর্ক হোন না হলে এ রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন, বাচ্চা ছেলেদের স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েদের আত্মদানের যে অর্জনে আমরা গণতন্ত্রের পথে যে যাত্রা করছি, তা রোধ করে ফেলবে। আপনারা সংস্কারের কথা বলে যে বিলম্ব করছেন তাতে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে। যদি আপনাদের আন্তরিকতা থাকে তাহলে দ্রুত সংস্কার করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘হঠাৎ আপনারা আনুপাতিক ভোটের নির্বাচনকে সামনে এনে জটিলতা তৈরি করবেন না। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের নামে জটিলতা তৈরি মানে স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদ দেয়া, আপনারা সুপরিকল্পিতভাবে কোনো জটিলতা তৈরি করবেন না। পৃথিবীর অনেক দেশ এ পদ্ধতি চালু করে ফিরে এসেছে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডা. শামীম ও ডা.কাকন প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম