বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তিনি ‘নায়ক রাজ’ হিসেবে পরিচিত। ষাট দশক থেকে শুরু করে প্রায় তিন দশক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছিলেন নায়ক রাজ্জাক। তার আসল নাম আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায়। আজ প্রয়াত এই তারকার ৮০তম জন্মদিন।
রাজ্জাকের অভিনয়ের শুরু কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন স্বরসতী পূজায় মঞ্চ নাটকে। গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। তার প্রথম অভিনীত নাটক ‘বিদ্রোহী’।
প্রয়াত এই অভিনেতার সিনেমায় প্রবেশ কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে। এছাড়া কলকাতায় ‘পঙ্কতিলক’ ও ‘শিলালিপি’ নামে আরও দুটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার কারণে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। এরপর জড়িয়ে পড়েন চলচ্চিত্রের সঙ্গে।
নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি ‘বেহুলা’ মুক্তি পায় ১৯৬৭ সালে। এটি পরিচালনা করেছিলেন জহির রায়হান। সেই থেকে শুরু। এরপর আর পেছন দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ক্রমান্বয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন তিনি। নায়ক হিসেবে তার শেষ ছবি ‘মালামতি’। নায়িকা ছিলেন নূতন। নায়ক চরিত্রের বাহিরে তিনি অভিনয় শুরু করেন ১৯৯৫ সাল থেকে।
তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, পিচঢালা পথ, আবির্ভাব, দ্বীপ নেভে নাই, টাকা আনা পাই, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা, চন্দ্রনাথ, শুভদা, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত। রাজ্জাকের প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অনন্ত প্রেম’ (১৯৭৭)। এতে নায়িকা চরিত্রে ছিলেন ববিতা। সর্বশেষ পরিচালিত ‘আয়না কাহিনি’ (২০১৪)। রাজ্জাকের সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র ‘কার্তুজ’ (২০১৪)।
৫০ বছরের ক্যারিয়ারে বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (সেরা অভিনেতা) ছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা।
খুলনা গেজেট/এনএম