অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। রাজধানী ঢাকাতেও বেড়েছে শীতের প্রকোপ। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছেছে ১০ ডিগ্রির ঘরে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কুয়াশার ঘনত্বও বাড়ছে। এর মধ্যেই শৈত্যপ্রবাহের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দু-এক দিনের মধ্যেই এটি বয়ে যেতে পারে। এটি হবে চলতি মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, আগামী ১৬ তারিখ থেকে কুয়াশা আরও বাড়বে। এ ছাড়া দু-একদিনের মধ্যেই শৈত্যপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আসতে পারে। ঢাকায় আসবে কি না, এটা বলা যাবে না। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে আসার সম্ভাবনা আছে। আবার মাসের শেষের দিকে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি বিভাগের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ১২-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। শৈত্যপ্রবাহ না হলেও তাপমাত্রা নামতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকালের বুলেটিনের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে; ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ভোলা ও মাদারীপুরেও। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নথিবদ্ধ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মাদারীপুরে তা ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রির নিচে ছিল। এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে অধিপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে। গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-উত্তর পূর্বাংশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা আর অন্যান্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, কুয়াশার যে প্রকোপ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে দেখছি, এটা আরও কয়েক দিন চলতে পারে। কয়েক দিন ধরে দেশের উত্তরের জনপদগুলোয় কুয়াশা ছিল। সেটা বিস্তৃত হয়ে ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে।
এখন শীত যেভাবে পড়েছে, তা আরও কয়েকদিন টানা একই রকম থাকতে পারে বলে জানান ওমর ফারুক। তিনি বলেন, উত্তরের হাওয়া দেশে শীত বহন করে নিয়ে আসে। এই যে কুয়াশার চাদর, দেশের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে এটা দীর্ঘ।
এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের শ্রীলঙ্কা উপকূলে অবস্থান করছে। এর বর্ধিত অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আর উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বিহার ও এর আশপাশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, সাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে ভারতের তামিলনাডুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।
খুলনা গেজেট/এইচ