খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

শীতলক্ষ্যার পাড়ে শোকের মাতম, ৩০ মরদেহ উদ্ধার

গেজেট ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করে পাড়ে নিয়ে আসা হয়েছে। সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত লঞ্চ থেকে আরও ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মোট ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

এর আগে রোববার (৪ এপ্রিল) অর্ধশত যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। গতকাল পাঁচ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল ২০ জনকে। এছাড়া নিখোঁজ ছিলেন অন্তত ২৯ জন। বিআইডব্লিউটিএর ১৮ ঘণ্টা ধরে চলা উদ্ধার অভিযান শেষে আরও ২৫ জনের মরদেহ পাওয়া যায়।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে অর্ধশত যাত্রী ছিলেন। গতকাল ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লঞ্চটি উদ্ধারের পর আরও ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

এদিকে স্বজনদের খোঁজে নদীর পাড়ে পরিবারের সদস্যরা ভিড় করেছেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। স্বজনহারাদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে শীতলক্ষ্যার তীর। লঞ্চটি তীরে আনার সঙ্গে সঙ্গে নিখোঁজদের সন্ধানে ভিড় করেন স্বজনরা।

গতকাল উদ্ধার পাঁচজনের মধ্যে চারজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আর একজন অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়া) মর্গে রাখা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক রোববার দিবাগত রাত ২টা পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছেন। আর চারজনের লাশ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়েছে।

হস্তান্তর করা লাশের মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরের মালপাড়া এলাকার হারাধন সাহার স্ত্রী সুনিতা সাহা (৪০), উত্তর চরমসুরা এলাকার অলিউল্লাহর স্ত্রী সখিনা বেগম (৪৫), একই এলাকার প্রীতিময় শর্মার স্ত্রী প্রতিমা শর্মা (৫৩), সদরের নয়াগাঁও পূর্বপাড়া এলাকার মিথুন মিয়ার স্ত্রী সাউদা আক্তার লতা (১৮)।

নাহিদা বারিক বলেন, লঞ্চডুবির এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন আমাকেসহ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশের প্রতিনিধিও রয়েছে।

এদিকে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, বড় একটি কার্গোজাহাজ যাত্রীবাহী একটি লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে পিষে চলে যায়। আর এতেই ঘটে এ দুর্ঘটনা।

রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল দোতলা ছোট আকারের যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘সাবিত আল আসাদ’। মদনগঞ্জ এলাকায় নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু এলাকায় পৌঁছালে এসকে-৩ নামের একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার পর লঞ্চের অনেক যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠে আসলেও নিখোঁজ ছিলেন অনেকে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হয় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী সদস্যদের। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় পৌঁছে কাজ শুরু করে। রাত ১০টার দিকে জাহাজটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর একে একে উদ্ধার করা হয় মরদেহ।

গত বছর জুনে বুড়িগঙ্গায় একইভাবে মর্নিং বার্ড-২ নামে একটি লঞ্চডুবে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!