ইউক্রেনের একটি শিশু ও প্রসূতি হাসপাতালে রাশিয়া বোমা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব ইউরোপের ওই দেশটির মারিউপোল শহরে অবস্থিত ওই হাসপাতালে হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বুধবার মারিউপোল শহর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, রুশ দখলদার বাহিনী শহরের একটি শিশু ও প্রসূতি হাসপাতালে বোমা হামলা করেছে। কর্মকর্তারা জানান, হামলায় শিশু ও প্রসূতি বিভাগসহ হাসপাতালটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।
হামলার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের সংখ্যা জানানো না হলেও বার্তাসংস্থা এপি পরে জানায়, রুশ বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন। তবে এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে মারিউপোল শহরে শিশু হাসপাতালের ওপর রুশ বোমাবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজসহ তিনি এক টুইটে বলেন, ‘নৃশংসতা, ধ্বংসাবশেষের নিচে মানুষ, শিশুরা চাপা পড়েছে।’
পরে রাজধানী কিয়েভ থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ান ফেডারেশন আসলে কি ধরনের দেশ যে তারা হাসপাতাল এবং প্রসূতি হাসপাতালগুলোকেও ভয় পায় এবং সেগুলো ধ্বংস করে?’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রসূতি হাসপাতালে কেউ কি রাশিয়ার সমালোচনা করেছে? যদি না করে থাকে তাহলে এটি (হামলা) কি ছিল? হাসপাতালে নাৎসীবাদ দূর করার কি আছে?’
এর আগে ইউক্রেনে অভিযান পরিচালনার কারণ হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটি থেকে নাৎসীবাদ দূর করার কথা বলেছিলেন। মূলত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সেই কথার দিকেই ইঙ্গিত করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একথা বলেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এটি ইতোমধ্যেই নৃশংসতার বাইরে। হানাদার সেনারা মারিউপোল শহরে যা করছে তা ইতোমধ্যেই নৃশংসতার থেকেও বেশি। রাশিয়ার এই যুদ্ধাপরাধের নিন্দা জানাতে আজ আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যা মূলত আমাদের দেশে হানাদারদের নিয়ে আসা সকল মন্দকে প্রতিফলিত করবে।’
এছাড়া প্রসূতি হাসপাতালের ওপর হামলাকে ইউক্রেনীয়দের ওপর যে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে তার চূড়ান্ত প্রমাণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ভিডিওবার্তার আগে দেওয়া এক টুইটে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অবিলম্বে ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ কার্যকরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের ক্ষমতা আছে কিন্তু আপনারা মানবতা হারিয়ে ফেলছেন।’
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলো বারবারই নো-ফ্লাই জোনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।