খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ
  সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ

শিশুর হাসি

এ এম কামরুল ইসলাম

শিশুর হাসি দেখতে কার না ভাল লাগে? আর তা যদি হয় দুই বছরের শিশু তাহলে আরো বেশি সুন্দর। গুটি গুটি পায়ে হাটা, আধো আধো বুলি কতই না মধুর।

হ্যা, আমি খুলনা গেজেট এর কথা বলছি। বয়স তার দুই বছর। হাসিমাখা মুখ, গুটি গুটি পায়ে হাটা, আধো আধো বোল। সবকিছু মিলে এক স্বর্গীয় দৃশ্য।

এই শিশুটির জন্ম খুলনায়। এর জনক একজন কীর্তিমান বাবা। শিশুটিকে লালন করছেন কিছু কীর্তিমান মানুষ। তাঁরা সকলেই বাবার আদর্শে বিশ্বাসী। এই কীর্তিমান মানুষগুলি সকলেই আমার প্রিয়ভাজন। আমি বিশ্বাস করি, এই শিশুটি একদিন আপন মহিমায় বেড়ে উঠবে। খুলনার সীমানা ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

যে গাছটি বাড়বে তার পাতা দেখলেই সহজে অনুমান করা যায়। খুলনা গেজেট জন্মের পর থেকে তার পাতা দিয়ে ভবিষ্যতের বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। দিনে দিনে এই বৃক্ষটি শাখা পল্লব ছড়িয়ে ফুল ফল দিয়ে মানব জাতির সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে সক্ষম হবে। সেদিন বেশি দূরে নয়।

আমাদের দেশের মিডিয়ার জগৎ অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ। এই জগতে সুনাম রক্ষা করে চলা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এখানকার বাতাস দূষিত বললে ভুল হবে না। দূষিত বাতাসে বসবাস করে নিজেকে দূষণমুক্ত রাখা কতখানি সম্ভব সেটাও চিন্তার বিষয়। তবুও চেষ্টা করতে ক্ষতি নেই। সবকিছুর মধ্যে ভাল কিছু নিহিত থাকে। রাজহংসের মতো দুধ আর পানি মিশ্রিত পাত্র থেকে ছেঁকে ছেঁকে দুধ বের করে পান করার যোগ্যতা থাকলে দূষিত বাতাসে থেকেও নির্মল বায়ু সেবন করা কোন কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব।

খুলনা গেজেট এর সকল কর্মী রাজহংসের মতো হয়ে বেছে বেছে দুধ পান করবে বলে আশা রাখি।

একটি অনলাইন পত্রিকা মাত্র দু’বছর বয়সে তার সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য নিতান্তই কম সময়। তারপরও খুলনা গেজেট অন্তত তার উপস্থিতি জানান দিতে লক্ষাধিক মানুষের মনে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তার এই অর্জন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সাথে সাথে এই শিশুটির জন্য প্রয়োজন যথাযথ পরিচর্যা। কথায় আছে, Nurse the baby, protect the child and free the adult.

শিশু খুলনা গেজেটকে এখন উপযুক্ত নার্সিং দিতে হবে। তারপর সে যখন শিশু অবস্থা পেরিয়ে কৈশোরে পদার্পণ করবে তখন তাকে প্রোটেকশন দিতে হবে; কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে গেলে তাকে মুক্ত করে দিতে হবে। যৌবনে গিয়ে সে নিজেকে বিলিয়ে দিবে মানবতার মাঝে। তার ঔরসে জন্ম নিবে আরো শত শত আদর্শ।

নেশা আর পেশা একজন মানুষের দু’টি দিক। নেশা এমন একটা জিনিস যা অন্য কেউ হাজার চেষ্টা করেও বন্ধ করতে পারে না। এমনকি যে মানুষের যে নেশা তা থেকে বিরত থাকতে সে নিজেও হিমশিম খায়। কোন মানুষ তার অন্তরের লালিত নেশা ছেড়ে দিতে কোন কারণে বাধ্য হলে তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। জীবনটা হয়ে যায় মৃত্যুর সমান। অর্থাৎ জীবন্ত মৃত।

পেশা হচ্ছে একজন মানুষের জীবন ধারণের অবলম্বন। জীবন জীবিকার তাগিদে মানুষ কত কিছুই করে। সারা জীবনভর অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন পেশা বেছে নেয়। কেউ কেউ একই সাথে কয়েকটা পেশা অবলম্বন পূর্বক জীবন ধারণ করে। কিন্তু তার নেশা থাকে মনে মনে। সুযোগ পেলেই মনের নেশায় মগ্ন হয়।

খুলনা গেজেট এর জনক ও কর্মীবৃন্দ সকলেই সাংবাদিকতার নেশায় মগ্ন। তারা এই নেশার খোরাক মিটাতে খুলনা গেজেটকে আকড়ে থাকবে। তাদেরকে কেউ এই নেশা থেকে এক চুল পরিমাণ বিরত রাখতে পারবে না বলে আমার বিশ্বাস।

আমার স্বল্প জ্ঞানে আজকাল একটা জিনিস বিশেষভাবে অনুমিত হচ্ছে। সেটা হলো মানুষের আমিত্ব। আজকাল মানুষের আমিত্ববোধ অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। কেউ কারো প্রতি আনুগত্য বা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে চায় না। সবাই নিজেকে বড় বলে মনে করে। একে অপরের প্রতি আস্থা রাখতে চায় না। কাউকে উপকার করলে উপকারীর উপকার স্বীকার করা দূরে থাক, বরং উপকারীর ক্ষতিসাধন করে তারপর ক্ষান্ত হয়।

মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে, ধর্মে ধর্মে, দলে দলে, গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় দ্বন্দ্ব সংঘাত লেগেই আছে। কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা ভক্তি করতে চায় না। এমনকি একই ধর্মে, একই দলে, একই দেশে, একই গ্রামে, একই পাড়ায় একে অপরের জন্য সামান্যতম স্বার্থ ত্যাগ করতে রাজি হয় না। নিজের স্বার্থের বেলায় সবাই ষোল আনা নিতে চায়। কিন্তু অন্যের স্বার্থে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয় না। অর্থাৎ মানুষের Common sense বলতে কিছুই নেই, বরং High sence অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। অবশ্য এরজন্য সাধারণ মানুষ একটুও দায়ী নয়। তারা বিভিন্ন সময়, বিভিন্নভাবে ঘটনা অঘটনার শিকার হতে হতে এ পর্যায়ে এসেছে। সমগ্র বিশ্ব ও দেশব্যাপী এই অসহনশীল পরিস্থিতির জন্য দায়ী বিশ্ব নেতৃত্ব ও দেশীয় রাজনীতি।

এ পরিস্থিতিতে খুলনা গেজেট কিভাবে তার নিরপেক্ষ ও সৃজনশীল অবস্থা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবে তা চিন্তার বিষয়। তবু, শেষ পর্যন্ত আশা রাখি বিশ্ব বিপর্যয়ের মধ্যে থেকেও আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলে উঠুক এই হাসিখুশি শিশুটি।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, সোনামুখ পরিবার।
(অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অব.)

খুলনা গেজেট/এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!