আর কয়েক দিন পর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই শারদিয়া দূর্গা পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মন্ডপে মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এরই মধ্যে শিল্পীর নিপুন হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরূপ পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সব প্রতিমা। তাইতো প্রতিমা তৈরিতে প্রায় সব প্রতিমালয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। কিছু মন্ডপে চলছে খড়ের কাজ আবার কোথাও চলছে মাটির কাজ।অনেক মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হলেও অপেক্ষায় রয়েছে রঙের কাজ।
আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদিয় দূর্গা পূজা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমন বার্তা। ১৪ অক্টোবর শনিবার মহালয়ার ভোরে চণ্ডীপাঠ শোনার অপেক্ষায় ভক্তকূল। সকালে শিউলি কুড়ানোর সময়টায় মাতৃ বন্দনায় মিলিত হবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
তাই দূর্গা পূজা উপলক্ষে দক্ষ কারিগররা দিন-রাত কাজ করেই চলেছেন। তাদের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিটি প্রতিমা।দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রতিটি মন্ডপেই প্রতিমা তৈরির কাজে ব্রাস্ত শিল্পীরা। প্রতিমা গড়ার কারিকররা খড় আর কাদামাটির মিশ্রণে দুর্গার পূর্ণ অবয়ব দিয়ে যাচ্ছেন একাগ্রচিত্তে। মন্দিরে মন্দিরে ব্যস্ত লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের প্রতিমা গড়তে। ব্যস্ততার এ চিত্র চোখে পড়ে শহর ও গ্রামের সব প্রতিমালয়ে।
উৎসবের পুর্নতা পায় যাদের হাতে, সেসব প্রতিমা শিল্পীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এখন কিছু মন্ডপে চলছে খড়ের কাজ আবার কোথাও চলছে মাটির কাজ। অনেক মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হলেও অপেক্ষায় রয়েছে রঙের কাজ।
এক এক জন ভাস্কর ৪ থেকে ৮টি স্থানে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। তবে চাহিদার তুলনায় মজুরি কম হলেও বাপ-দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রাখতেই কাজ করছেন বলে জানান শিল্পীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সব প্রতিমা গড়তে হবে। তাই দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। পুজার ১০ দিন আগে থেকে রংয়ের কাজ শুরু করবেন তারা। পুজার আগে সব প্রতিমার কাজ শেষ করবেন বলে জানালেন শিল্পীরা।
প্রতিমা শিল্পী রাজিব সেন বলেন, এ বছর আমি নড়াইল ও গোপালগঞ্জে ৬টি প্রতিমা গড়ার কাজ হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ শহরে ৩টি প্রতিমা গড়ছি। এখন কিছু মন্ডপে চলছে খড়ের কাজ আবার কোথাও চলছে মাটির কাজ। অনেক মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হলেও অপেক্ষায় রয়েছে রঙের কাজ। পূজার ১০ দিন আগে থেকে রংযের কাজ শুরু হবে। পুজা শুরুর তিন চার দিন আগেই প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ হবে।
গোপালগঞ্জ শহরের মডেল স্কুল রোডের নিউ মডেল সংঘের আয়োজক তুষার কান্তি বিশ্বাস বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এ জেলায় সকল ধর্ম-বর্নের মানুষের সহযোগীতায় এ বছরও আড়ম্বরে এ দুর্গাউৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এ বছরও ব্যাপক ধুমধামের সাথে দুর্গাউৎসব পালন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অসিত কুমার মল্লিক বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ জেলায় সব ধর্ম বর্নের সহযোগিতায় এ বছরও ব্যাপক আড়ম্বরের সাথে দুর্গাউৎসব পালন করা হবে। জেলায় এ বছর ১২ শতাধিক মন্দিরে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। অত্যন্ত আনন্দ মুখর ভাবে সকল ধর্ম বর্নের মানুষ মিলে মিশে সুন্দর ভাবে এ পুজা উদযাপন করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম