যশোরের শার্শায় অবৈধ ভাবে হাঁসের ফার্মে শিয়াল মারার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় সেই সংযোগের জিআই তারে স্পৃষ্ট হয়ে আহাদ আলী (৭২) নামে এক কৃষক মারা গেছে। নিহত আহাদ আলী শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাহাদুর মোড়লের ছেলে। অপরদিকে হাঁসের খামারের মালিক সোহাগ হোসেন ওরফে কালু একই গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে শার্শার রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলে বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসি হাঁসের খামারটি ভাংচুর করে। এঘটনায় খামার মালিক পক্ষের লোকজন মৃত আহাদ আলীর একটি ঘরের চাল ভেঙ্গে দিয়েছে এবং মামলা না করার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগি পরিবার।
মৃত আহাদ আলীর ছেলের স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, তার শ্বশুর বাড়ি থেকে সকালে তাদের জমিতে কাজ করতে যায়। তাদের জমির পাশে ছিল একই গ্রামের কালুর হাঁসের খামার। সে ওই খামারে শিয়াল মারার জন্য প্রতিদিন বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ এর তারে সংযোগ দিয়ে রাখত। ওই সংযোগের তার তাদের জমির আইলের উপর দিয়ে ফেলে রাখা হয়। আজ সকালে কালু বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ না করায় তার শ্বশুর এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
তিনি বলেন, কালুর চাচাতো ভাই জুয়েল বাড়ি এসে নিজেকে পুলিশের বড় গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে ভূক্তভোগী পরিবারকে মামলা না করার জন্য হুমকি দেয়। আমার স্বামীসহ তারা তিন ভাই বিদেশ থাকায় আমাদের বাড়িতে কেউ নেই। আমরা তাদের হুমকির কারণে মামলা করতে ভয় পাচ্ছি।
গ্রামবাসীরা জানায়, এর আগে ওই খামারে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে গরু, কুকুর ও শিয়াল মারা যাওয়ায় গ্রামবাসি খামার মালিককে শিয়াল মারার জন্য পেতে রাখা বিদ্যুৎ এর তারটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলে। কিন্তু তারা তাদের গ্রামবাসীর কথা না মেনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ না করায় এ দুর্ঘটনার শিকার হয় আহাদ আলী। গ্রামবাসি আরো জানায়, কালুর চাচাতো ভাই পুলিশের গোয়েন্দা অফিসার জুয়েল নিহত আহাদের বাড়ি এসে মামলা না করার জন্য চাপ দেয় ভুক্তভোগি পরিবারকে।
এ ব্যাপারে জুয়েল কে, পুলিশ এর কোন পদে আছে জিজ্ঞাসা করলে জুয়েল জানায়, সে একজন কনস্টেবল। এর আগে সে ডিবিতে ছিল। মামলা না করতে হুমকি দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি তাদের কোন হুমকি দেয়নি।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম কে রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রামচন্দ্রপুর গ্রামে একজন মারা গেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো কেউ এজাহার দায়ের করেনি। এজাহার দায়ের ও ময়না তদন্তের পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এসএস