জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, কিছু একটা ঘটলেই যমুনায় যাওয়ার প্রবণতা সহ্য করা হবে না। এ ক্ষেত্রে সরকার কঠোর হবে। বুধবার (১৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে দ্রুতই প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবে। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবির বিষয়ে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনের বিষয়ে সরকার কথা শুনবে। কিছু হলেই যমুনায় চল, এমন আর হবে না। সরকার কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে হামলার শিকার হোন উপদেষ্টা। তার দিকে পানির বোতল ছুঁড়ে মারা হয়। এরপর সেখান থেকে কথা না বলে তিনি চলে আসেন।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি চক্র তার ওপরে আক্রমণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন উপদেষ্টা মাহফুজ।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একটি পক্ষ ঢুকে আন্দোলনকে স্যাবোটাজ করার চেষ্টা করছে, তারা কারা তাদের নাম বলতে চাই না।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা আমার ওপর হামলা করেছে তারা জুলাই যোদ্ধাদের কেউ নয়, আন্দোনকারীদের মাঝে থেকে যারা হামলা করেছে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা উচিত।
উল্লেখ্য, আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল রাত ৯টার দিকে সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, সরকার শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বিশ্বাসী, কিন্তু সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
হাসনাতের প্রতিক্রিয়া
একজন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম সমস্যা সমাধানে গিয়েছিলেন, তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।
এ কথা স্পষ্টভাবে মনে রাখা প্রয়োজন- আপনাদের প্রতিনিধিত্বের দাবি বলেই তিনি আপনাদের কাছে এসেছেন। কিন্তু এ ধরনের উগ্র ও হঠকারী আচরণ ভবিষ্যতে কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না, বরং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
মাহফুজ আলম আইনি পথে হাঁটবে কি না জানি না, তবে আন্দোলনের নেতৃত্বের উচিত প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করা এবং ভবিষ্যতে এমন ন্যক্কারজনক আচরণ পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া।
সমালোচনা গণতান্ত্রিক অধিকার- কিন্তু শারীরিক লাঞ্ছনা বর্বরতা, এবং সেটির কোনো যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা নেই।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণও সন্দেহজনক। সকল জনদাবির সম্মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলে দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা স্পষ্ট। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও সেটির বিষয়ে কেন এখনও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, সেটিও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে