বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই আমাদের সন্তানদের গুলি করে হত্যা করা একটি ক্ষমাহীন অপরাধ এবং কোনো রাজনৈতিক দোহাই দিয়ে এটাকে গ্রহণযোগ্য করার কোনো সুযোগ নেই।’
রাজধানী ঢাকার উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা অবস্থায় গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘আমি দেশের সুধীসমাজ, সব পেশাজীবী এবং সর্বস্তরের জনসাধারণকে ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী যে আন্দোলনের সূচনা করেছে, তা গত ১৬ জুলাই থেকে একটি দুঃখজনক রক্তক্ষয়ী ঘটনা প্রবাহের জন্ম দিয়েছে, যা এখনো বিরাজমান। গোটা জাতি আজ রক্তাক্ত এবং শোকে মুহ্যমান।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আমাদের নিজেদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আমাদেরই সন্তানদের বুক লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে, শত শত ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছে। এমনকি ছোট শিশুরাও এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি। হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এই নির্যাতন এখনো চলমান।’
আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমাদের সন্তানদের গুলি করে হত্যা করা একটি ক্ষমাহীন অপরাধ এবং কোন রাজনৈতিক দোহাই দিয়ে এটাকে গ্রহণযোগ্য করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতিকে রক্ষা করা সব নাগরিকের দায়িত্ব। আমাদের মনে রাখতে হবে রাজনীতি, দল, সরকার অথবা ক্ষমতা কোনো কিছুই আমাদের সন্তানদের জীবনের থেকে অধিক মূল্যবান নয়। আমি দেশের সুধীসমাজ, সব পেশাজীবী এবং সর্বস্তরের জনসাধারণকে ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একজন চিকিৎসক হিসেবে দেশের সব চিকিৎসকদের সর্বপ্রকার চিকিৎসাসেবা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।
যেকোনো মূল্যে এবং যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের সন্তানদের বাঁচাতে হবে। আমি আবারও সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, রাজনীতি, দল, সরকার বা ক্ষমতা কোনো কিছুই আমাদের সন্তানদের জীবনের থেকে অধিক মূল্যবান নয়। ক্ষমতা প্রদর্শন নয় বরং দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে ছাত্রদের সব দাবি নিঃশর্তভাবে মেনে নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন এবং সব হত্যাকাণ্ডের বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে বিচার সুনিশ্চিত করুন।’
উল্লেখ্য, সাবেক এই রাষ্ট্রপতি গত ১৩ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে