শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ও চলমান সংকট নিরসনে সিলেটে পৌঁছেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা শিক্ষামন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এরপর সকালে সিলেট সার্কিট হাউসে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শক করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিকেল ৪টার দিকে শাবিপ্রবির চলমান সংকট নিরসনের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে তাঁর। এরপর রাতের মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে ১৪ দিন থেমে থাকলেও গত বুধবার বিকেল থেকে আবারও শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির এক পর্যায়ে ১৯ জানুয়ারি থেকে এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী।
গতকাল বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার স্থানে নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে রক্তিম হস্তছাপ আঁকেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানান, শিক্ষার্থীদের লড়াইয়ের ইশতেহার হিসেবে এ হস্তছাপ আঁকা হলো।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ‘আমরা অধ্যাপক জাফর ইকবালের মাধ্যমে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। সে সময় আমাদের বিভিন্ন দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।’
শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা আমাদের কঠোর কর্মসূচিগুলো থেকে সরে আসার পরও ন্যূনতম দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। এ জন্য এত দিন পর আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায়ের জন্য কাল বৃহস্পতিবারও আমরা বিক্ষোভ মিছিল করব।’
গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ১৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পরদিন ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে আন্দোলনটি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
গত বুধবার বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের ছবি, ব্যঙ্গচিত্র সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলছে ও চলবে।’ এদিন তাঁরা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে উপাচার্যের পক্ষ নেওয়াদের হুঁশিয়ারি দেন।
খুলনা গেজেট/এনএম