শ্যামনগর উপজেলার সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের আত্মহননের ঘটনার তদন্ত ও আত্মহত্যায় প্ররোচণা মামলার আসামীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শোক র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছেরিন এর শ্যামনগর শাখা শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় নকীপুর সরকারি হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বর থেকে একটি শোক র্যালি বের করে। র্যালিটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শ্যামনগর প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির শ্যামনগর শাখার সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পরিমল কর্মকার, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কালিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আল মেহেদী লিটন, শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কৃষ্ণনন্দ মুখার্জী, নকীপুর হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ। মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেন শ্যামনগর উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি।
বক্তারা বলেন, গত বছর কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারজন কর্মচারি নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি কৈখালি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমসহ তিনজন অভিভাবক সদস্য ও তিনজন শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারকে অপবাদ দিয়ে ও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা ও টাকা আত্মসাতের মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল। সর্বোপরি ওই চক্রটি বিরোধ মীমাংসার নামে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আদায় করে পাঁচ লাখ টাকা। এরপরও মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়া প্রধান শিক্ষককে ছুটি মঞ্জুর না করে তাকে ২ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দেন সভাপতি আব্দুর রহিম। একপর্যায়ে মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার তার গোপালপুরের ভাড়া করা সামনে ৪ জানুয়ারি আম গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভিন বাদি হয়ে ওই রাতেই সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। দুর্ভাগ্য গত চার দিনেও পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আবুল বাসারের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের আগামি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্ত করতে হবে। এর ব্যত্য়য় হলে বৃহত্তর কর্মসুচি গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং মাধমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, আসামীরা এলাকার বাইরে অবস্থান করায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড