বাগেরহাটের চিতলমারীতে শিক্ষক সোহাগ মোল্লার বেধড়ক মারপিটে আব্দুল্লাহ আল প্রিন্স নামে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে ওই শিক্ষার্থী শরীরচর্চা’র নির্দেশনা লক্ষ্য না করায় হ্যান্ডমাইক ও বেত্রাঘাতের শিকার হয়।
আহত শিক্ষার্থী উপজেলার আড়ুয়াবর্নী গ্রামের মো. শহীদ শেখের ছেলে।
আব্দুল্লাহ আল প্রিন্স স্থানীয় এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলা সদরে অবস্থিত সানসাইন কিডস কেয়ার কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক (প্রধান শিক্ষক)। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে আব্দুল্লাহর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ পত্রে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ আল প্রিন্স সানসাইন কিডস কেয়ারের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। আনুমানিক এক থেকে দেড় মাস পূর্বে একদিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকার কারণে সানসাইন কিডস কেয়ারের পরিচালক সোহাগ মোল্লা তাকে বেত্রাঘাত করেন। এ বিষয়ে ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তখন আব্দুল্লাহর পরিবার ওই শিক্ষককে কোন কিছু বলেননি। গত ২ ডিসেম্বর শরীরচর্চা করার সময় আব্দুল্লাহ শিক্ষক সোহাগের নির্দেশনা শুনতে পায়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সানসাইন কিডস কেয়ারের পরিচালক সোহাগ মোল্লা হ্যান্ডমাইক দিয়ে তাকে আঘাত করে। এ সময় সে ভয়ে দৌঁড় দিলে সোহাগ মোল্লা তার পিছু পিছু পিটাতে থাকে। ওই শিক্ষার্থী ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ে মারাত্মক চোট লাগে। খবর শুনে আব্দুল্লার ফুফাতো বোন দৌড়ে গিয়ে আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে শিক্ষক সোহাগের হাত থেকে রক্ষা করেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আব্দুল্লাহ আল প্রিন্সের বাবা মো. শহীদ শেখ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে আব্দুল্লাহ ব্যথায় হাত দিয়ে কোন কিছুই ধরতে বা কিছুই করতে পারছে না। আমি ছেলেকে চিকিৎসা জন্য নিলে ডাক্তার তাকে এক্স-রে করে হাতের ব্যান্ডেজ দিয়ে দিয়েছে। শিশুদের সাথে ধরনের অমানবিক আচরণ আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে এ ধরনের আচরনের বিচার দাবি করছি। শুধু আমার ছেলেই নয় সে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে একই আচরণ করেন। তার ভয়ে কেউই মুখ খুলতে সাহস পায় না।’
সানসাইন কিডস কেয়ার কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক (প্রধান শিক্ষক) সোহাগ মোল্লা মারপিটের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা খেলাধুলা করি। হয়তো তখন কোন আঘাত লাগতে পারে। বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে আব্দুল্লার চিকিৎসক বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে আমার কাছে আনা হয়েছিল। সে আমার চিকিৎসাধীন রয়েছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগকারী ও আহত শিক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিল। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
খুলনা গেজেট/এনএম