খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  দুর্নীতি ও আমলাতন্ত্র দেশে ব্যবসায় পরিবেশ নিশ্চিতের অন্যতম বাধা : সিপিডি
  সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদন স্থগিত

শাহবাজ-কোরেশি কে বসছেন পাকিস্তানের মসনদে?

আন্তর্জা‌তিক ডেস্ক

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করতে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে আজ। সোমবার বেলা ২টায় দেশটির নিম্নকক্ষে ভোট শুরু হবে। রোববার এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুজন।

দুপুরে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

জাতীয় পরিষদের সচিবের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই ৭০ বছর বয়সী শাহবাজ শরিফ।

সেই সঙ্গে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ কোরেশিও জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র।

তবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ কোরেশির মনোনয়নপত্রের কার্যকারিতা নির্ভর করছে দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর। যদি পিটিআয়ের সব এমপি সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশনের আগেই একযোগে পদত্যাগ করেন সে ক্ষেত্রে তার মনোনয়নপত্রের কার্যকারিতা আর থাকছে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী পদে লড়তে হলে তাকে এমপি হতে হবে।

রোববার রাতে ইমরান খানের বাসভবনে পিটিআইয়ের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এমপিদের পদত্যাগের বিষয়ে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দলটি।

মোহাম্মদ কোরেশি ছাড়া প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে শাহবাজ শরিফের সামনে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।

পাশাপাশি, বিরোধী জোটের শরিক দলগুলো শাহবাজ শরিফের বিষয়ে সহমত জানালে নতুন প্রধানমন্ত্রী হবার লড়াইয়ে আর কোনো বাধাই থাকছে না তার।

রোববার এক টুইটার বার্তায় শাহবাজ শরিফ তার ভাই নওয়াজ শরিফ, ভাতিজি মরিয়ম নওয়াজ ও দলের ত্যাগী নেতাদের প্রতি সাধুবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, কী কঠিনভাবে নওয়াজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ, শাহিদ খাকান, খাজা আশিফ, সাদ রফিক, আহসান ইকবাল, রানা সানাউল্লাহসহ অনেকে নির্যাতিত, অপমানিত ও কারাভোগ করেছেন।’

অনাস্থা ভোটের ফল প্রকাশের পর পার্লামেন্টের কার্যক্রম রোববার ভোরে মুলতবি ঘোষণা করা হয়। সোমবার ফের অধিবেশনের ডাক দেন ভারপ্রাপ্ত স্পিকার আয়াজ সাদিক।

নির্দেশনা অনুযায়ী, রোববার বেলা ২টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদে লড়তে ইচ্ছুকরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই ৭০ বছর বয়সী শাহবাজ শরিফ।

শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্টে ইমরানবিরোধী অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব উত্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন, নওয়াজ শরিফের সঙ্গে শাহবাজ শরিফের তফাত হলো তিনি সামরিক বাহিনীর সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সফল।

অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানো ইমরান খানের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী হবার দৌড়ে শুরু থেকেই এগিয়ে রয়েছেন শাহবাজ শরিফ।

ভোটের ফল প্রকাশের পরপরই রোববার ভোরে পার্লামেন্টে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘এক নতুন ভোর শুরু হয়েছে। এই জোট নতুন পাকিস্তান বিনির্মাণ করবে।’

দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য নাম মনোনীত করতে রোববার দুপুরেই জাতীয় পরিষদে অধিবেশন আহ্বান করার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবারই নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতে পারে ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তান।

দেশের বাইরে খুব কম পরিচিত এই শাহবাজ শরিফ একজন রাজনীতিবিদ পরিচয়ের চেয়ে দক্ষ প্রশাসক হিসেবে সুপরিচিত। তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনবার। ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহবাজ শরিফ। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারকের ভূমিকায় আছেন।

স্বাধীন দেশ হিসেবে পাকিস্তানের জন্মলাভের পর থেকেই দেশটির রাজনৈতিক পালাবদলের নেপথ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনী। এই সশস্ত্র বাহিনী পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক সব বিষয়াদির নিয়ন্ত্রক হয়ে আছে।

দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের সরাসরি মদদে তিনটি বেসামরিক সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে এবং কোনো প্রধানমন্ত্রীই নির্ধারিত পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করতে পারেননি।

কে এই শাহবাজ শরিফ

২০১৮ সালের আগস্ট থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহবাজ শরিফ।

তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনবার। এখন পর্যন্ত এই প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শাহবাজ।

দেশটির অন্যতম বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নেওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন শাহবাজ নওয়াজ। তিনি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৮৮ সালে।

তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ১৯৯৭ সালে।

১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতের পর পরিবারসহ সৌদি আরবে নির্বাসনে যান শাহবাজ শরিফ। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি।

দেশটির জাতীয় নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন জয়লাভ করলে তার ভাই শাহবাজ শরিফ দ্বিতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

দুর্নীতির অভিযোগে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর দলটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয় তার ভাই শাহবাজ শরিফকে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ‘৯৫-এর ১ ধারা অনুযায়ী, এই সংসদ ঘোষণা দিচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির ওপর সংসদের কোনো আস্থা নেই। ফলে ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!