খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

শহীদ সাংবাদিক বেলালকে নিয়ে কিছু কথা

শেখ দিদারুল আলম

আজ শহীদ সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিন ভাইয়ের ১৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী। ২০০৫ সালে এই দিনে ঢাকার সিএইমএইচে (সন্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবণে করেন। এর আগে ২০০৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাবে ব্যাডমিনটন খেলাশেষে রাত নয়টার দিকে যখন বাড়ি যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই বোমার আঘাতে মারাত্মক আহত হন আমাদের প্রিয় বেলাল ভাই। কিছু সময়ের মধ্যে নেয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রিয় বেলালকে দেখতে এবং রক্ত দিতে হাসপাতালে ভিড় করে শত শত মানুষ।

বেলাল ভাই শুধুমাত্র একজন সাংবাদিক ছিলেন না। ছিলেন তার বয়রা রায়েরমহল এলাকা সহ খুলনার সাধারণ মানুষের বন্ধু। তাই তার মৃত্যু সংবাদে আর লাশের পাশে দাড়িয়ে দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অন‌েককে কাঁদতে দেখেছি। রায়েরমহল এলকায় হিন্দু মুসলিম সে যেই হউক না কেন কেউ অসুবিধায় পড়লে সকলের আগে এগিয়ে আসতো আমাদের বেলাল। মানবতার সেবা ছিল তার কাছে অগ্রগন্য।

আমরা দু’জন একই বয়সের হলেও তি‌নি সাংবাদিকতায় আসেন আমার অনেক পরে। তবে তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণ ছিল। তাই তিনি উদারতা দিয়ে জয় করে নিয়েছিলেন সকলকে। দায়িত্ব পালন করেছেন খুলনা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে। রাজনৈতিক মত আদর্শের মিল না থাকলেও প্রয়াত সাংবাদিক মানিক সাহা ও মরহুম হুমায়ুন কবির বালু ভাইয়ের সাথে তার আত্মার বন্ধন ছিল অটুট।
আমার বিএল কলেজ জীবনে তার সান্নিধ্য ভুলবার নয়। তার মোটর সাইকেলে পিছনে বসে দেয়ানা পাবলা শিরোমনি খালিশপুর দিঘলিয়া দৌলতপুরের সবত্র ঘুরেছি। তিনি নিজের জন্য ভোট না চেয়ে আমার জন্য ভোট চেয়েছেন।

এই সমাজকর্মী মানুষটি একাধারে যেমন ছিলেন শিল্পী তেমন ছিলেন ক্রীড়া প্রেমিক। তিনি যেমন ভাল ইসলামি সংগীত গেতেন তেমনি ভাল ভলিবল খেলতেন ।
খুলনা প্রেসক্লাবের অনেক অস্বচ্ছল সাংবাদিককে নিরবে সহযোগিতা করতেন।

২০০৫ সালে ১১ফেব্রুয়ারি যখন খবর পাই বেলাল ভাই ইন্তেকাল করেছেন সে দিন কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়ি। খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে জানাযায় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তার সাথে আহত হওয়ার সময় থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থা সময় অবধি যারা ছিলেন তাদের কছে শুনেছি যখন ঐ অবস্থায় কথা বলতেন তখন জানতে চাইতেন তার (বেলাল) নামাজ কাজা হয়েছে কিনা বা পড়েছেন কিনা। আহত হওয়ার সময় থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পবিত্র কলেমা ও কোরআন শরিফ তেলওয়াত করার চেষ্টা করেছেন ।

আল্লাহ আমার ভাই কে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করুন। আমিন।

লেখক : যুগ্ম সম্পাদক, খুলনা গেজেট ও ইউএনবি প্রতিনিধি

খুলনা গেজেট/ বি এম এস




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!