সুপার সাইক্লোন সিডরের ১৩ বছরেও শরণখোলাবাসীর প্রাণের দাবি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ৩ বছর মেয়াদের এ বেড়িবাঁধ প্রকল্প ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আরো এক বছর বৃদ্ধি করে কাজের মেয়াদ ৩ দফা বাড়ানো হয়েছে। মেগা বাজেটের বেড়িবাঁধে নদী শাসনের ব্যবস্থা না থাকায় নির্মাণাধীন বাঁধ নদীতে বিলীনের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বলেশ্বর নদী সংলগ্ন বগী গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা রুস্তুম আলী বলেন, বলেশ্বর নদে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ঘূর্ণীঝড় সৃষ্টি হলে আমরা আতঙ্কে থাকি। সিডরের ১৩ বছরেও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বলেন, নদী শাসন ছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মীত হলে তা পানিতে ভেসে যাবে। যা জনসাধারনের কোন কাজে আসবে না। ইতোমধ্যে সাউথখালীর গাবতলা ও বগী এলাকায় নতুন ওয়াপদা বেড়িবাঁধ নির্মাণের স্থানে আকস্মিকভাবে কয়েক দফা শত শত মিটার এলাকা জুড়ে সিসি ব্লকসহ বাঁধ বলেশ্বর নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দেওয়ায় নদী শাসনের বিষয়টি খুবই জোরালো হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম বলেন, বগী এলাকায় বলেশ্বর নদীর ভাঙ্গনের তীব্রতায় নতুন করে ডিজাইন ও জমি অধিগ্রহনের জন্য প্রকল্পের কাজের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩’শ কোটি টাকা ব্যয়ে সিএইচডব্লিউই নামে চাইনিজ একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারী থেকে ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩.২ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন এবং ৩৫/১ পোল্ডারে ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরের সৃষ্ট জলোচ্ছাসে শরণখোলা উপজেলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরণখোলায় সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানী ঘটে। হাজার হাজার বাড়ীঘর ও গাছপালা বিধস্ত হয়। ধসে যায় মাইলের পর মাইল ওয়াপদা বেড়িবাঁধ। পরবর্তীতে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আধুনিক, টেকসই ও উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি ওঠে। পরবর্তীতে বাস্তবতা উপলদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণখোলাবাসীকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দেন।
খুলনা গেজেট/এনএম